নারায়ণগঞ্জের এসপি হারুনকে বদলি

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে বদলি করা হয়েছে।
রবিবার (৩ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ অধিশাখার উপসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে পুলিশ অধিদফতরের পুলিশ সুপার (টিআর) শাখায় বদলি করা হলো। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে গত ১ নভেম্বর দিবাগত রাত ১টার দিকে পারটেক্স গ্রুপের কর্ণধার আবুল হাসেমের ছেলে আম্বার গ্রুপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেলের গুলশানের বাসভবন থেকে তার স্ত্রী ফারহা রাসেল এবং পুত্র আহনাফ রাসেলকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে এসপি হারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন আম্বার চেয়ারম্যান রাসেল।
আম্বার চেয়ারম্যান অভিযোগ করেছিলেন, আম্বার ডেনিম থেকে ৮ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন হারুন অর রশীদ। এই চাঁদার টাকা না পেয়ে গত বুধবার তার ব্যক্তিগত গাড়ি জব্দ করা হয়। পরে ১ নভেম্বর গভীর রাতে তার গুলশানের বাড়িতে ৫০-৬০ জন ডিবি পুলিশ, থানা পুলিশ ও সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যদের নিয়ে হানা দেন এসপি হারুন।
রাসেল আরও অভিযোগ করেন, তার বাড়িতে গিয়ে প্রতিটি রুম তছনছ করা হয়। এক পর্যায়ে তার স্ত্রী ফারাহ রাসেল এবং আনাফ রাসেলকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় নারায়ণগঞ্জে। তার গাড়ি চালক সুমনকে মাদক ও গুলি দিয়ে আটক করা হয়। এ ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় আম্বার চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেলকেও আসামি করা হয়।
এদিকে রাসেলের বাড়িতে মধ্যরাতে অভিযান চালানো এবং সেখান থেকে তার স্ত্রী-পুত্রকে আটক করার ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
এর আগে ২ নভেম্বর পারটেক্স গ্রুপের কর্ণধার আবুল হাসেম ও তার স্ত্রীকে এসপি অফিসে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে বিকেলের দিকে শওকত আজিজ রাসেলের ছেলে ও স্ত্রীকে তাদের হেফাজতে ছেড়ে দিয়ে গাড়ি চালক সুমনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় শওকত আজিজ রাসেল ও চালক সুমনকে আসামি করে মাদক ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছিল।
হারুন ২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের এসপি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তার আগে ২০১৪ সালের ২৪ আগস্ট পুলিশ সুপার হিসেবে গাজীপুরে যোগদান করেন তিনি।
২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তৃতীয় দফায় গাজীপুর সদর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়ায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ওই বছরের ২১ এপ্রিল এসপি হারুন অর রশিদকে গাজীপুর থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর প্রত্যাহারের আদেশ তুলে নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে ওই বছরের ৩ মে গাজীপুরের পুলিশ সুপার পদে পুনর্বহাল করেন। দুই দফা মিলিয়ে চার বছর গাজীপুরে ছিলেন তিনি। এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এ বিষয়ে জানতে হারুন অর রশীদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
তবে, পুলিশের পক্ষ থেকে বদলির কোনো কারণ এখনও পর্যন্ত জানানো হয়নি।