‘গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ হচ্ছে দেশের ষষ্ঠ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : পরিকল্পিত নগর ও নাগরিকের সুবিধা নিশ্চিত করতে দেশের ষষ্ঠতম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে গাজীপুরে। নতুন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৮’-এর খসড়া উত্থাপন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

রবিবার (৬ জানুয়ারি) সরকারের প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় এই আইনের প্রস্তাবটি সুপারিশ করা হয়।

বৈঠক শেষে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার বলেন, ‘রবিবারের বৈঠকে প্রস্তাবটির সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হবে অনুমোদনের জন্য।’

বর্তমানে দেশে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রয়েছে। ষষ্ঠতম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে গাজীপুরে। এছাড়া পায়রা কুয়াকাটা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, মধুপুর গড়, দেশের ঐত্যিবাহী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়া ভারী ও মাঝারি শিল্পসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে এই জেলায়। এসব প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পিত ও সমন্বিত উন্নয়নের জন্য উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন। গাজীপুর সিটি করপোরেশন ঘোষিত হওয়ায় মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের জন্য কর্তৃপক্ষ করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ‘গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৮’ এর খসড়া তৈরি করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। খসড়াটির সুপারিশের জন্য গত ১৯ ডিসেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠান। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রবিবার (৬ জানুয়ারি) সরকারের প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় উত্থাপন করে। কমিটি প্রস্তাবের পক্ষে অভিমত দেয়।

নতুন এই উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে অন্যান্য কর্তৃপক্ষের মতো স্বউন্নয়নে পরিচালতি হবে। মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, গাজীপুরের ভারী ও মাঝারি শিল্পসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত উন্নয়নের মাধ্যমে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন, শিল্প ও বাণিজ্যিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে। অন্যান্য উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মতই এই কর্তৃপক্ষের প্রধান থাকবেন চেয়ারম্যান।

গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় থাকবে সিটি করপোরেশন এলাকায়। সরকারের অনুমতি নিয়ে এখতিয়ারভুক্ত এলাকায় শাখা স্থাপন করা যাবে। চেয়ারম্যান ছাড়াও সার্বক্ষণিক সদস্য থাকবে চারজন। কর্তৃপক্ষের সচিব হবেন সদস্যসচিব। এছাড়া সদস্য থাকবেন আরও ১৪ জন।

সদস্যদের মধ্যে বুয়েটের নগর অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পর্যায়ে একজন প্রতিনিধি, ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পুলিশ কমিশনারের একজন প্রতিনিধি, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি, স্থাপত্য অধিদফতর মনোনীত একজন প্রতিনিধি, গাজীপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, গাজীপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি বা তার মনোনীত একজন প্রতিনিধি এবং কর্তৃপক্ষ এলাকায় বসবাসকারী একজন নারীসহ তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তি সদস্য থাকবেন। চেয়ারম্যানের ও সার্বক্ষণিক সদস্যদের মেয়াদ হবে তিন বছর। চেয়ারম্যান ও সদস্য হিসেবে একজন ব্যক্তি দুই মেয়াদে নিয়োগের যোগ্য হবেন।

কর্তৃপক্ষ আইন কার্যকর হওয়ার পর কোনও ভবন নির্মাণ বা নকশা অনুমোদন এবং জলাধার খনন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া করা যাবে না। এছাড়া অন্যান্য কর্তৃপক্ষের মতোই বিভিন্ন বিষয়ের দায়িত্ব একই রকম রাখা হয়েছে আইনে।

আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ ভূমির যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করে মহাপরিকল্পনা, ডিটেল এরিয়া প্ল্যান প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে। এজন্য ভূমি জরিপ ও সমীক্ষা, গবেষণা পরিচালনাসহ সংশ্লিষ্ট সব ধরনের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button