রংপুর মেডিকেলের পিপিই কর্মকর্তাদের স্বজনদের দখলে!
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসতে ব্যবহারের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই) নিয়ে চলছে চরম নৈরাজ্য। পর্যাপ্ত মজুত থাকা সত্ত্বেও পিপিই পাচ্ছেন না তারা। অভিযোগ, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের বদলে পিপিই দেওয়া হচ্ছে হাসপাতালের কর্মকর্তাদের স্বজন ও কিছু বহিরাগতকে।
প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন হাসপাতালে কর্মরত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। যার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের কাছে ৩৩৮টি পিপিই হস্তান্তর করেছে কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ করে বিক্ষোভকারীরা জানান, হাসপাতালের কর্মচারীর সংখ্যা ৬ শতাধিক। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে আসছেন। অথচ পিপিই ব্যবহার করছেন হাসপাতালের কর্তাব্যক্তিদের পরিবারের লোকজন, স্থানীয় প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তাসহ বহিরাগতরা।
হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মশিউর রহমান বলেন, যথেষ্ট মজুত থাকা সত্ত্বেও কর্মরত চিকিৎসকসহ নার্স, আয়া, ব্রাদার, ক্লিনার যারা সার্বক্ষণিক রোগীদের সেবায় নিয়োজিত দেন তাদেরকে পিপিই দেওয়া হচ্ছেনা। হাসপাতালের পরিচালক দিচ্ছি-দেবো বলে ঘোরাচ্ছেন। বাধ্য হয়ে কর্মচারীরা পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করলে কর্মচারীদের জন্য ৩৩৮টি পিপিই দেওয়া হয়। এখনও তিন শতাধিক কর্মচারী পিপিই পাননি।
এদিকে, বেশ কয়েকজন নার্সের অভিযোগ, একাধিকবার পিপিই চাওয়ার পরেও না পেয়ে বাধ্য হয়ে কেউ কিনে নিয়েছেন আর কেউবা বানিয়েছেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৮৫ জন নার্স-ব্রাদারের বিপরীতে দেড়শটি পিপিই দেওয়া হয়েছে বলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান তারা।
একই শর্তে বেশ কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক জানান, তাদেরও বেশিরভাগই পিপিই পাননি। কিন্তু সিনিয়র চিকিৎসকরা তাদের পুরো পরিবারের জন্য পিপিই নিয়ে গেছেন।
এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালের স্টোরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বিপুল পরিমাণ পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়াও কাজী ফার্মাসহ বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠান কয়েকশ পিপিই দিয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে।
এই বিপুল সংখ্যক পিপিই কোথায় গেল তার সঠিক তথ্য দিতে রাজি হননি সংশ্লিষ্ট কেউই। স্টোর কিপারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেছে কর্তৃপক্ষ।
সার্বিক বিষয়ে জানতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সঠিক ব্যাক্তিরাদের কাছেই যাতে পিপিই পৌঁছায় সেজন্য ধীরে ধীরে দেওয়া হচ্ছে।