স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার পর প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে ৬ টুকরা করে স্ত্রী

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে বাঁধা দেয়ায় স্বামীকে দুধের সাথে ঘুমের ওষধ খাইয়ে প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে বালিশচাপা দিয়ে হত্যার পর করাত দিয়ে মাথা, দুই হাত ও দুই পা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে চাপাতি দিয়ে পেট কেটে দেহ সেফটিক ট্যাংকিতে এবং বিচ্ছিন্ন হাত, পা, মাথাসহ বাকি পাঁচ (টুকরা) অংশ পলিথিনে মুড়িয়ে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেন স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিক।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত নিহতের স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিককে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে গাজীপুর মেট্রাপলিটন পুলিশ।

রোববার গাজীপুর মেট্রাপলিটন পুলিশ (জিএমপি) সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার অপরাধ (উত্তর) জাকির হাসান এ সব তথ্য জানান।

নিহতের নাম সুমন মোল্লা (২৮)। তিনি বাগেরহাটের চিতলমারী থানার গোলা বরননী বাজার এলাকার জাফর মোল্লার ছেলে।

গ্রেপ্তারকৃত আরিফা বেগম (২৪) দিনাজপুরের চিরিরবন্দর থানার নারায়নপুর এলাকার মৃত আশরাফ আলীর মেয়ে এবং নিহত সুমনের স্ত্রী। আর পরকীয়া প্রেমিক তনয় সরকার (৩১) ফরিদপুরের মধুখালী থানার নরকোনা এলাকার আদিত্য সরকারের ছেলে।

সুমন ও তার স্ত্রী আরিফা দম্পতি কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জ এলাকার মাওলানা সফিউল্লাহর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

আরিফার পরকীয়া প্রেমিক তনয় সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট এলাকায় মতিউর রহমানের বাসায় ভাড়া থাকতেন। তনয় ও আরিফা একই পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার জাকির হাসান বলেন, গত ২১ এপ্রিল দুপুরে কাশিমপুর থানার সারদারগঞ্জের হাজী মার্কেট পুকুরপাড় এলাকার একটি সেফটিক ট্যাংক থেকে মাথা ও হাত-পাবিহীন অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে কাশিমপুর থানায় মামলা করেন।

জাকির হাসান আরও বলেন, ক্লু’লেস এ মামলাটি নিবিড়ভাবে তদন্তে নামে পুলিশ। এক পর্যায়ে সন্ধিগ্ধ হিসেবে শনিবার ভোরে তনয় এবং আরিফাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যায় নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং নিহত ব্যাক্তির নাম সুমন মোল্লা বলে প্রকাশ করে। পরে তাদের দেখানোমতে সারদাগঞ্জ হাজীমার্কেট পুকুরপাড় এলাকার ময়লার স্তুপ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি ও করাত এবং চক্রবর্তীর তেতুইবাড়ী এলাকার ময়লার ভাগার থেকে থেকে নিহতের খণ্ডিত হাত, পা, মাথাসহ পাঁচ টুকরা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া তনয়ের বাসা থেকে নিহতের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাদ দিয়ে জাকির হাসান বলেন, আরিফার সাথে তনয় সরকারের (৩১) পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সুমন এ নিয়ে তনয়কে কয়েকবার মারধর করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রী আরিফা ও তার প্রেমিক তনয় সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে আরিফা দুধের সাথে ১০টি ঘুমের বড়ি সুমনকে খাওয়ান। পরে আরিফা ফোন করে তনয়কে ডেকে এনে দু’জনে মিলে বালিশচাপা দিয়ে সুমনকে হত্যা করে ঘরের মধ্যে রেখে দেন। পরদিন ২০ এপ্রিল মরদেহ করাত দিয়ে মাথা, দুই হাত, দুই পা বিচ্ছিন্ন করে এবং চাপাতি দিয়ে পেট কেটে ফেলেন। পরে আরিফার ব্যবহৃত কাথা দিয়ে দেহ বেঁধে ওই সেফটিক ট্যাংকিতে এবং দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হাত, পা, মাথাসহ পাঁচটি অংশ পলিথিনে মুড়িয়ে তেঁতুইবাড়ী এলাকার ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button