ট্রাম্পকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাম কর্তৃপক্ষ

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৩ সাল পর্যন্ত ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাম একাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন না।

এই সময় পর্যন্ত এই দুইটি মাধ্যমে তাকে নিষিদ্ধ করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় উস্কানিমূলক পোস্ট দেয়ার কারণে গত জানুয়ারি মাসে তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল ফেসবুক। সংস্থাটির ওভারসাইট বোর্ড সেই নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখলেও ‘চিরতরে নিষিদ্ধের’ শাস্তির সমালোচনা করে। তারা বলেন, এমন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যা সাধারণের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়।

যৌক্তিক শাস্তি নির্ধারণ করতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে ছয় মাস সময় দিয়েছিল ওভারসাইট বোর্ড, কিন্তু একমাসের মধ্যেই ফেসবুক তাদের সিদ্ধান্ত জানাল।

ফেসবুকের বক্তব্য, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আচরণ ছিল সংস্থাটির নিয়মকানুনের চরম লঙ্ঘন।

তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, ফেসবুকের এই পদক্ষেপ সেই কোটি কোটি মানুষকে অপমান করা, যারা তাকে গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন।

এরই সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমের এই বিশাল প্রতিষ্ঠানটিতে মন্তব্য যাচাই বাছাইয়ে রাজনীতিবিদরা যে ছাড় পেতেন, সেই নীতি থেকেও সরে এসেছে।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ‘সংবাদ মূল্য রয়েছে,’ এই যুক্তিতে উস্কানিমূলক বা আপত্তিজনক বক্তব্য দিয়ে রাজনীতিবিদরা যে ছাড় পেতেন, সেটি আর দেয়া হবে না।

ফেসবুকের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক ভাইস-প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ একটি পোস্টে বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামের এই নিষেধাজ্ঞা সাতই জানুয়ারি থেকে কার্যকর বলে ধরে নেয়া হবে, যেদিন তার একাউন্ট স্থগিত করা হয়েছিল।

”যেসব ঘটনাপ্রবাহের কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্পের একাউন্ট স্থগিত করা হয়েছিল, সেগুলোর গুরুত্ব বিবেচনা করে আমরা মনে করছি, তিনি আমাদের নিয়মনীতির গুরুতর লঙ্ঘন করেছেন, যা সর্বোচ্চ শাস্তির প্রাপ্য।”

”যদি আমরা দেখতে পাই যে, এখনো জননিরাপত্তার গুরুতর ঝুঁকি আছে, তাহলে আমরা আরও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়াবো এবং ঝুঁকি না কমা পর্যন্ত এভাবে পর্যালোচনা করে যাবো।” তিনি বলছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প কি জবাব দিয়েছেন?
ফেসবুকের এই নিষেধাজ্ঞার পর সেভ আমেরিকা পলিটিকাল অ্যাকশন কমিটির পক্ষ থেকে পাঠানো একটি বিবৃতিতে  ট্রাম্প বলেছেন, ”ফেসবুকের এই আদেশ আমাদের দেশের সাড়ে সাতকোটি মানুষ, অন্য আরও যারা আমাদের ভোট দিয়েছেন, তাদের সবার জন্য অপমান….”

”এভাবে সেন্সর করে আর চুপ করিয়ে দেয়ার কর্মকাণ্ড করে তাদের পার পেতে দেয়া ঠিক হবে না। শেষ পর্যন্ত আমরাই জিতবো। আমাদের দেশ আর কোন নিপীড়ন সহ্য করবে না।” তিনি বলেছেন।

দ্বিতীয় আরেকটি বিবৃতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতাকে আক্রমণ করেন।

”এরপর আবার যখন আমি হোয়াইট হাউজে থাকবো, মার্ক জুকারবার্গ এবং তার স্ত্রীর অনুরোধে আর কোন ডিনার হবে না।” বলছেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।

ফেসবুকের এই সিদ্ধান্তে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে আবার ফেসবুকে ফিরে আসার সুযোগ পাবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

জানুয়ারি মাসের দাঙ্গায় উস্কানি দেয়ার অভিযোগে ফেসবুকের বাইরে ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটার, ইউটিউব, স্ন্যাপচ্যাট, টুইচ এবং আরও কয়েকটি সামাজিক মাধ্যমে নিষিদ্ধ রয়েছেন।

সামাজিক মাধ্যমে নিষিদ্ধ থাকার কারণে নিজস্ব যে সামাজিক মাধ্যম তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছিলেন মি. ট্রাম্প, এই সপ্তাহের শুরুতে জানা গেছে যে, সেই প্রকল্প স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button