অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধ ঠেকাতে হাইকোর্টে দুই আবেদন

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : দেশের সব অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধে হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদনে লড়ার জন্য পক্ষভুক্ত হতে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দুটি আবেদন করা হয়েছে।

জানা গেছে, আপিলে লড়তে পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদনকারী অনলাইন পোর্টাল দুটির একটি নেত্রকোনার আলো ডটকম ও অন্যটি ভয়েসবিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম। প্রথমটি নিবন্ধনের জন্য ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। অন্য অনলাইন পোর্টালটি ২০১৯ সালের ২৭ জুন আবেদন করে। কিন্তু তাদের ওই আবেদনে কোনো সাড়া দেয়নি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দফতর। তাই তারা হাইকোর্টে পক্ষভুক্ত হতে আবেদন করেন।

ওই দুই পোর্টালের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গত সোমবার এ আবেদন করা হয়। আবেদনের বিষয়টি বুধবার নিশ্চিত করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সানজিদ সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, ওই দুই কর্তৃপক্ষ থেকে তারা অনলাইন পোর্টালের নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) করার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে সব কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সমাপ্ত হওয়ার আগেই হাইকোর্ট অনিবন্ধিত অনলাইন পোর্টাল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। যেহেতু তাদের অনলাইন পোর্টালটির নিবন্ধন এখনো সম্পন্ন হয়নি, তাদের অবস্থা কী হবে। সেজন্য তারা হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আইনি মোকাবিলা করতে পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী আরো বলেন, এ বিষয়ে আগামী সপ্তাহে আদালতে শুনানি হতে পারে। তবে, এখনো নির্ধারিত হয়নি সেই আবেদন হাইকোর্ট বিভাগে নাকি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানি হবে।

এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দেশের সব অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ কারার জন্য নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আদেশের কপি হাতে পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে এ আদেশ বাস্তবায়ন করে, তা প্রতিবেদন আকারে আদালতে জমা দেয়ার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন আদালত। এ সংক্রান্ত এক রিটে সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর পরে ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হয়। আদালতের আদেশে বলা হয়, দেশের সব অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধের পাশাপাশি মানহানিকর তথ্য ও গুজব ছড়ালে নিবন্ধিত পোর্টালও বন্ধ করা যাবে। এরপর গত সোমবার পর্যন্ত অনিবন্ধিত ১৭৮টি অনলাইন সংবাদমাধ্যম বন্ধ করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

এর আগে গত ১৬ আগস্ট এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল কেন বন্ধ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ।

ওইদিন এক সপ্তাহের মধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান ও প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলেছিলেন আদালত।

গত ৫ মে সংবেদনশীল সংবাদসহ যেকোনো খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমগুলোর জন্য ‘নৈতিক নীতিমালা’ প্রণয়ন চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নোটিশের পরও কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী জারিন রহমান ও রাশিদা চৌধুরী নীলু।

রিট আবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি রাজধানীতে ২১ বছরের এক তরুণীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দণ্ডবিধি আইনের ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংবাদমাধ্যমগুলো, বিশেষ করে অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোতে অগ্রহণযোগ্যভাবে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। অথচ এসব সংবাদ পরিবেশন বন্ধে বিটিআরসি কিংবা প্রেস কাউন্সিল কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

এমতাবস্থায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কর্তৃক সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে নৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে দেশে অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টালগুলো চালু থাকার পরও বিটিআরসি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই এসব পোর্টালের রেজিস্ট্রেশনও জরুরি, বলেও রিটে উল্লেখ করা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button