অগ্নিঝুঁকিতে গাজীপুরের ১৩৩ মার্কেট

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুরে কর্মসূত্রে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলার অগণিত মানুষের বসবাস। এসব মানুষের নিত্যদিনের চাহিদা মেটাতে গড়ে উঠেছে দেড় শতাধিক মার্কেট ও শপিংমল। তবে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মতে, জেলার ১৩৩টি মার্কেট এবং শপিংমল অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ। এর পাশাপাশি মহানগর এবং জেলার প্রতিটি উপজেলায় সবজি বাজার ঘেঁষে গড়ে ওঠা আধাপাকা মার্কেটগুলোতেও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই।

২০১৭ এবং ২০১৮ সালে ১৩৩টি মার্কেট ও শপিংমল কর্তৃপক্ষকে ভবন অগ্নিঝুঁকিমুক্ত করতে চিঠি দেয় গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। অথচ পর পর দুই বছর নোটিস পেয়েও ভবনগুলো অগ্নিঝুঁকিমুক্ত করতে ব্যবস্থা নেননি মালিকরা। এতে অগ্নিকা-ে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন মার্কেট ও শপিংমলের দোকানিরা।

তবে এসব ভবনে অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ ব্যানার টানানোর পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে বলে গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানিয়েছেন।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান জানান, ‘মহানগরে গড়ে ওঠা ৮৪টি, শ্রীপুর উপজেলায় ১৯টি, কালিয়াকৈর উপজেলায় ২৬টি এবং কালীগঞ্জ উপজেলায় চারটি মার্কেট ও শপিংমল অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ। তবে সারা জেলায় দপ্তরটির জনবল মাত্র ১২০ জন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি নগরীর টঙ্গী আনারকলি রোডে মনোয়ারা কমপ্লেক্স পরিদর্শনে যায় গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ।

পরে পরিদর্শনকারীরা ভবন কর্তৃপক্ষকে দেওয়া নোটিসে লেখেন, ভবনটিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। রিজার্ভ পানির ব্যবস্থাও নেই। একই বছর ৪ ফেব্রুয়ারি নগরীর বোর্ডবাজার মসজিদ মার্কেট পরিদর্শনে যায় দপ্তরটি।

পরে পরিদর্শনকারীরা নোটিসে লেখেন, মার্কেটের বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতিও নেই। ওই বছরের ১ জুন নগরীর চান্দনা চৌরাস্তার উনিশে টাওয়ার পরিদর্শনে যান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তারা।

পরে টাওয়ার কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক, উপ-পরিচালক এবং সহকারী পরিচালকের কাছে চিঠি পাঠান জেলা দপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান। চিঠিতে ভবনের ত্রুটির বিষয়ে তিনি লেখেন, ভবনটি নির্মাণের আগে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর কর্তৃক শর্ত সাপেক্ষে ছাড়পত্র গ্রহণ করা হয়নি।

ভবনের বৈদ্যুতিক তারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম মানসম্মত নয়। বিদ্যুৎ পরিদর্শন দপ্তর কর্তৃক ব্যবহার পরীক্ষণ ও রেকর্ড সংরক্ষিত নেই। ভবনে জকি পাম্প ও ফায়ার পাম্প নেই। অথচ নোটিস দেওয়ার দুই বছর পেরিয়ে গেলেও অগ্নিঝুঁক্তিমুক্ত হতে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি ভবন কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া ২০১৭ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিদর্শনে নগরীর জয়দেবপুর শহরে তানভির প্লাজা, ছাইদ ভবন, চান্দনা চৌরাস্তায় শাপলা ম্যানশন, রহমান শপিংমল, রিয়াজ টাওয়ার, কে এস টাওয়ার, এস এ টাওয়ারসহ বেশ কয়েকটি নামিদামি মার্কেট ও শপিংমল অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

 

এ সংক্রান্ত আরো জানতে…

অগ্নিঝুঁকিতে গাজীপুরের ১১০ হাসপাতাল

 

সূত্র: খোলা কাগজ

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button