ইউক্রেনকে ভাঙার চেষ্টা করছে রাশিয়া!

গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ ইউক্রেনের। সোমবার ফের তুরস্কে মুখোমুখি আলোচনায় বসছে দুই দেশের প্রতিনিধি।

ইউক্রেনের সেনার গোয়েন্দা প্রধান রোববার অভিযোগ করেছেন, কোরিয়ার মতো ইউক্রেনকে দুই টুকরো করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। তার বক্তব্য, রাশিয়া ইতিমধ্যে যে জায়গাগুলি দখল করেছে সেগুলিকে একত্রিত করে একটি রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টা করতে পারে। বাকি ইউক্রেনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সেই রাষ্ট্রটিকে ব্যবহার করাই রাশিয়ার উদ্দেশ্য। একইসঙ্গে গোয়েন্দাপ্রধানের বক্তব্য, ইউক্রেন সে কাজ হতে দেবে না।

গোয়েন্দাপ্রধান জানিয়েছেন, ইউক্রেন এবার গেরিলা পদ্ধতিতে রাশিয়ার সেনার উপর আঘাত হানবে। রাশিয়ার সেনাকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হবে। পিছিয়ে না গেলে মৃত্যু ছাড়া রাশিয়ার সেনার হাতে আর কোনো উপায় থাকবে না।

তুরস্কে রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনা

ইউক্রেনের একাধিক শহরে এখনো নাগাড়ে গোলাবর্ষণ করে চলেছে রাশিয়া। তারই মধ্যে সোমবার তুরস্কে ফের মুখোমুখি বৈঠকে বসছে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার প্রতিনিধি। সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত বৈঠক চলবে বলে জানানো হয়েছে। বস্তুত, রোববারেও ভিডিও বৈঠক হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। সেখানেই সোমবার মুখোমুখি আলোচনায় বসার প্রস্তাব ওঠে। দুই দেশই তাতে সম্মত হয়। রাশিয়ার প্রতিনিধি অবশ্য সংবাদসংস্থা ডিপিএ-কে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার এবং বুধবার আলোচনা হবে।

এর্দোয়ানের বক্তব্য

সোমবার বৈঠক শুরু হওয়ার আগে ফের রাশিয়া এবং ইউক্রেনের কাছে যুদ্ধবিরতির আবেদন জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান। রোববার এবিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে ফোনে তার কথা হয়েছে। এরপরেই এর্দোয়ান একটি টুইট করেন। সেখানে তিনি ইস্তামবুলে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের আলোচনা হওয়ার কথাও বলেছেন। তবে বৈঠক কবে শুরু হবে এবিষয়ে তিনি কিছু জানাননি। এর্দোয়ান দুই দেশের কাছে দ্রুত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে শান্তিপ্রস্তাবে সই করার আর্জি জানিয়েছেন।

জেলেনস্কির বক্তব্য

রোববার ৯০ মিনিটের একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি বলেছেন, তৃতীয় দেশ যদি নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেয়, তাহলে নিউট্রাল বা নিরপেক্ষ অবস্থান মেনে নিতে আপত্তি নেই ইউক্রেনের।

কূটনীতির পরিভাষায় নিউট্রাল স্টেটাস একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ। এর অর্থ, ইউক্রেন ন্যাটো বা ওই ধরনের গোষ্ঠীর অংশ হবে না। পরমাণু অস্ত্রও রাখতে পারবে না। জেলেনস্কির বলেছেন, শান্তির স্বার্থে এই বিষয়টি মেনে নিতে তিনি রাজি আছেন। কিন্তু তৃতীয় কোনো দেশকে গ্যারান্টার হিসেবে থাকতে হবে। তাদের জানাতে হবে, ইউক্রেনের নিরাপত্তার দায়িত্ব তারা নেবে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের আগে থেকেই মস্কো দাবি করে আসছে, ইউক্রেনকে তারা ন্যাটোর সদস্য হতে দেবে না। কারণ, ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হলে রাশিয়ার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি স্পষ্টভাবেই তার অবস্থান জানিয়েছেন। তুরস্কের বৈঠকে এই বিষয়টি গুরুত্ব পাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার ভাষা ব্যবহার নিয়েও রাশিয়ার বেশকিছু বক্তব্য আছে। এবিষয়েও আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়েছেন জেলেনস্কি।

পাঁচ হাজার ১০০ ট্যাঙ্ক ধ্বংসের অস্ত্র

একদিকে আলোচনা অন্যদিকে লড়াই। জার্মানির কাছ থেকে রোববার পাঁচ হাজার ১০০টি ট্যাঙ্ক ধ্বংস করার অস্ত্র কিনেছে ইউক্রেন। এই অস্ত্রগুলি কাঁধে নিয়ে ব্যবহার করতে হয়। আরজিডাব্লিউ৯০ এইচএইচ সিরিজের এই অস্ত্রগুলিকে ম্যাটাডোরও বলা হয়। ২৫ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে জার্মানির কাছ থেকে এই অস্ত্রগুলি কিনেছে ইউক্রেন। জার্মানির একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এর মধ্যে দুই হাজার ৬৫০টি অস্ত্র ইউক্রেনে পৌঁছে গেছে। বাকি দুই হাজার ৪৫০টি অস্ত্র কয়েকদিনের মধ্যেই ইউক্রেনে পৌঁছে যাওয়ার কথা।

পোল্যান্ডের কাছেও ট্যাঙ্ক আর ফাইটার জেট চেয়েছে ইউক্রেন। তবে পোল্যান্ড কবে তা ইউক্রেনকে দেবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button