আবার এলো আষাঢ়
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ভোরের জানালায় চোখ রাখতেই, আকাশে মেঘের আনাগোনা। এই বুঝি নামলো ঝুম বৃষ্টি। এদিকে গত কয়েকদিন ধরে নগরীর পথে পথে জারুল, সোনালু ও কামিনী ফুলের সৌন্দর্যে মন কাড়ছে। সব মিলিয়ে প্রকৃতির এমন পালাবদলে বাংলা ক্যালেন্ডার উল্টে দেখি আজ পহেলা আষাঢ় অর্থাৎ বর্ষার আগমন। বর্ষা মানেই প্রকৃতিতে প্রাণসঞ্চার, সতেজ সবুজে স্নিগ্ধ করে তোলে বাংলার নিসর্গ।
আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুইয়ে মিলে বর্ষাকাল। বাঙালি সাহিত্যিকদের লেখায় বর্ষা যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে… আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে…’
বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষা ঋতু কাব্যময়, প্রেমময়। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। কদম ফুলের মতো তুলতুলে নরম, রঙিন স্বপ্ন দুই চোখের কোণে ভেসে ওঠে, ঠিক যেমন করে আকাশে সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায়।
তবে আষাঢ় শুরু হলেও শহরে আগের মতো কদম ফুলের দেখা মেলা ভার। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে আষাঢ়ের কদমে। আর কদম ছাড়া বর্ষার কোথায় যেন অপূর্ণতা রয়ে যায়। তারপরও জরাজীর্ণ গ্রীষ্মক্লান্ত প্রকৃতিকে বর্ষার আকাশ-ভাঙা জলে স্নান করিয়ে সিক্ত হয় ধরণীতল।
বর্ষায় বাংলার পরিবেশ বদলে যায়। নিয়মিত বর্ষণে প্রকৃতি হয়ে ওঠে আর্দ্র কোমল। তবে বর্ষা যেমন আনন্দের, বর্ষার নির্মম নৃত্য তেমনই হঠাৎ বিষাদে ভরিয়ে তোলে জনপদ। যেমন— হঠাৎ করে আসা বৃষ্টি নগরবাসীকে স্বস্তি এনে দেয়, আবার জলাবদ্ধতার কারণে সেই বৃষ্টিই হয়ে দাঁড়ায় দুর্ভোগের কারণ। তবুও বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুনের আবাহন।