দেশের কল্যাণ, দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তি কামনায় শেষ হলো আখেরি মোনাজাত

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : দেশের কল্যাণ, দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তি কামনায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হল তাবলিগ জামাতের তিন দিনের সম্মিলন বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১০টায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মারকাজের তাবলিগ জামায়াতের সুরা সদস্য মাওলানা মো. জোবায়ের হাসান। ২০ মিনিটের মোনাজাতের একটি অংশ তিনি বাংলায় এবং বাকি অংশ বাংলায় দোয়া করেন। মোনাজাত শেষ হয় সকাল ১০টা ২০ মিনিটে।

ইজতেমা ময়দানের বিদেশি নিবাসের পূর্বপাশের বিশেষ মোনাজাত মঞ্চ থেকে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। এই মোনাজাত টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

এর আগে ফজরের পর বয়ান করেন বাংলাদেশের মাওলানা রবিউল ইসলাম। আর ভারতের আব্দুর রহমান হেদায়তি বয়ান করেন। হেদায়তি বয়ানের পরপরই শুরু হয় আখেরি মোনাজাত।

প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেয় কয়েক লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে তাবলিগ জামাতের বিদেশি অনুসারী থাকেন ৩০ থেকে ৪০ হাজার। তাবলিগ জামাতের নিয়মিত অনুসারী নন, এমন অনেকও বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে শামিল থাকতে চান।

গত শুক্রবার আম বয়ানের মধ্য দিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়। এই পর্বে অংশ নেন মাওলানা মো. জোবায়েরের অনুসারীরা।

এর বাইরে শুধু আখেরি মোনাজাতে শরিক হতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসতে থাকে শনিবার থেকেই। বাস, ট্রাক, কার, মাইক্রোবাস, ট্রেন, লঞ্চে করে এসে টঙ্গীতে পৌঁছে অবস্থান নিতে শুরু করেন।

নরসিংদী থেকে আখেরি মোনাজাতের অংশ নিতে টঙ্গীতে আসেন রমজান মিয়া। দুই বন্ধুর সঙ্গে রাত ৩টায় ইজতেমা ময়দানের উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। ট্রাকে করে গাজীপুর বাইপাসে এসে তারপর কিছুটা হেঁটে, কিছুটা অটোরিকশায় তারা ইজতেমা মাঠের কাছে পৌঁছান সকালে।

ময়মনসিংহের আবুল কালাম রাত আড়াইটার দিকে বাসে করে রওনা হয়েছিলেন আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে। সকাল ৭টায় তিনি পৌঁছান গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস এলাকায়। এরপর ভেঙে ভেঙে তাকে বাকি পথ যেতে হয়।

রাজধানীসহ আশপাশের এলাকার লোকজন শীত আর কুয়াশা উপেক্ষা করে রাতেই টঙ্গীমুখো হন। মধ্যরাত থেকে টঙ্গীমুখী সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় ১৫ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটেও ইজতেমা মাঠে পৌঁছেছেন অনেকে।

ইজতেমার মাঠে যাদের জায়গা হয়নি, আশপাশের বাসাবাড়ি, ভবন, ভবনের ছাদ কিংবা করিডোর, সড়কের পাশে ফুটপাতে এমনকি গাছতলায় এস তারা মোনাজাতে হাত তুলেছেন।

মূল ইজতেমা ময়দানে নারীদের বসার কোনো ব্যবস্থা নেই। সে কারণে ময়দানের বাইরে খালি জায়গায়, কলকারখানা ও বসত বাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন বহু নারী।

আগামী ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি হবে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। তাতে অংশ নেবেন দিল্লির মাওলানা সা’দ কান্ধলভীর অনুসারীরা।

বিদেশ থেকে আসা অতিথিরা প্রথম পর্ব শেষে ইজতেমাস্থল ত্যাগ করে হাজী ক্যাম্পে অবস্থান করবেন। সেখান থেকে তারা নিজ নিজ গন্তব্যে যাবেন।

আর দ্বিতীয় পর্বের বিদেশি মেহমান যারা আসবেন তারা ইজতেমা মাঠেই অবস্থান করবেন এবং ইজতেমা শেষে তারা যার যার গন্তব্যে চলে যাবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button