ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু: ল্যাবএইডের ৬ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ভুল চিকিৎসায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাহসিন হোসাইনের মৃত্যুর অভিযোগে ধানমন্ডির ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের ছয় চিকিৎসকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা করা হয়েছে।

সোমবার (২৬ জুন) মামলাটি দায়ের করেন নিহত তাহসিনের বাবা মনির হোসেন।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ্ দিবা ছন্দা বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ধানমন্ডি থানার পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন

মামলার আসামিরা হলেন ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের এমডি ডা. এ এম শামীম, ওই হাসপাতালের সার্জন ডা. মো. সাইফুল্লাহ, সহকারী সার্জন ডা. মাকসুদ, ডা. সাব্বির আহমেদ, ডা. মোশাররফ, ডা. কনক ও হাসপাতালের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মো. শাহজাহান।

বাদীপক্ষের আইনজীবী তানভীর বিন সজিব ও ফয়সাল বিন আসাদ মামলা ও আদেশের বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদীর ছেলে তাহসিন কিছুদিন থেকে অসুস্থ বোধ করায় গত ২৭ মার্চ তাকে ল্যাবএইডের ডা. সাইফুল্লাহকে দেখান। তিনি তাৎক্ষণিক তার ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, তার অবস্ট্রাক্টিভ স্মল গাট বা নাড়ির প্যাঁচ রয়েছে। এ কারণে তার পেটে ব্যথা এবং মল ত্যাগ করতে পারছে না। দ্রুত অস্ত্রোপচার করতে হবে। পরে গত ২৮ মার্চ অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর তাহসিনের অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

এ বিষয়ে ডা. মাকসুদ বাদীকে বলেন, অস্ত্রোপচার সফল হয়নি। রোগীকে সুস্থ করতে হলে আবার অপারেশন করতে হবে। এরপর গত ৬ এপ্রিল দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচার করেন ডা. সাইফুল্লাহ। দ্বিতীয়বার অপারেশনের পরও রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। দীর্ঘ তিন মাস চিকিৎসা চলার পর গত ২৩ জুন তার মৃত্যু হয়। তিন মাসে তাকে ১৪৪ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। চিকিৎসা ব্যয় হিসেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রায় ২৭ লাখ টাকা বিল করে। এর মধ্যে ১০ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে হাসপাতাল থেকে তার সন্তানের লাশ গ্রহণ করে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।

তাহসিনের বাবা মনির হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ডা. সাইফুল্লাহকে অনেকবার জিজ্ঞাসা করেছি, আমার ছেলের সমস্যা কী? কিন্তু উনি কোনোবারই সঠিক করে কিছুই বলতে পারেননি। অথচ তার দুবার অপারেশন করা হয়েছে। তিনি যে আমার ছেলের ভুল চিকিৎসা করেছেন, তা শতভাগ নিশ্চিত। এ সময়ে আমার ছেলেকে ১৪৪ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে। আমি প্রথম অপারেশনের পর এখান থেকে রিলিজ নিয়ে ভারতে চিকিৎসা করাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ রোগীকে ছাড়পত্রও প্রদান করেনি।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসার নামে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ ও এই চিকিৎসকরা আমার ছেলেকে তিলে তিলে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button