কালীগঞ্জের ফল ব্যবসায়ী হত্যায় জড়িত ৫ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১

নিজস্ব সংবাদদাতা : কালীগঞ্জের ফল ব্যবসায়ী মোমেন শেখকে (৫০) হত্যায় জড়িত প্রধান হোতাসহ পেশাদার৫ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১। গ্রেপ্তার সকলেই পেশাদার ছিনতাইকারী দলের সক্রিয় সদস্য।
শনিবার (২২ জুলাই) রাতে ঢাকার দক্ষিণখান ও গাজীপুরের মাজুখান এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
রোববার (২৩ জুলাই) র্যাব-১ এর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর এ এস এম মাঈদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নিহত মোমেন শেখ কালীগঞ্জের ছাতিয়ানি উত্তরপাড় গ্রামের মৃত উসমান আলী শেখের ছেলে। তিনি কালীগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় রিকশাভ্যানে করে ফল বিক্রি করতেন।
গ্রেপ্তার ছিনতাইকারীরা হলো, নরসিংদীর পলাশ থানার জিনারদী এলাকার শফর আলীর ছেলে আরজুমিয়া (৩৪), নড়াইলের লোহাগড়া থানার তেলকারা এলাকার মিটু মোল্লার ছেলে মোঃ সোহান (১৮), ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার বাঘান এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে নবী হোসেন (২৯),নেত্রকোনার দুর্গাপুর থানার বন্ধকোশইন এলাকার সাবেদ আলীর ছেলে মোঃ রাজিব মিয়া (২১) এবং গাজীপুর মহানগরের উত্তর জাঙ্গালিয়া পাড়া এলাকার মোঃ চান মিয়ার ছেলে মোঃ শাকিল আহম্মেদ (১৮।
র্যাব জানিয়েছে, ছিনতাইকারীদের হাতে ব্যবসায়ী মোমেন শেখ হত্যার ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন ও জড়িত মূলহোতা আরজু মিয়াসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হত্যার দায় স্বীকার করে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামীরা জানিয়েছে, গ্রেপ্তাররা পেশাদার ছিনতাইকারী দলের সক্রিয় সদস্য। সকলে গাজীপুরের বিভিন্ন এলকায় ছিনতাই করে থাকে।
গ্রেপ্তার আরজু মিয়ার বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, তারা পূর্বের মতো ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে গত ১৪ জুলাই ভোররাতে বাসা থেকে বের হয়ে তারা নরুন বাজারে অবস্থান করতে থাকে। সে সময় ভিকটিম মোমেন শেখেরঅটো রিকসা দেখে তা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। পরে অটো রিকশাটি হানকাটা ব্রিজের উপরে পৌঁছালে তারা অটো রিকশাটি গতিরোধ করে এবং মোমেন শেখের সঙ্গে থাকা টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ারচেষ্টা করে। সে সময় মোমেন শেখ তাদেরকে ছিনতাইয়ে বাধা দিলে আরজু মিয়া তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে মোমেন শেখের বুকে আঘাত করে। সে সময় অভিযুক্ত সোহানও আরেকটি লোহার রড দিয়ে মোমেন মিয়াকে আঘাত করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত হলে মোমেন শেখের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।

উল্লেখ্য : ১৪ জুলাই ভোর রাতে ফল ব্যবসায়ী মোমেন শেখ ফল কিনতে ব্যাটারি চালিত মাহবুব আলমের নঅটো রিকশায় করে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা করে। পরে হাড়িনাল হানকাটা ব্রীজের উপর পৌঁছলে অজ্ঞাতানামা পিক-আপযোগে ৫/৬ জন ছিনতাইকারী অটো রিকশার গতিরোধ করে এবং মোমেন শেখের কাছে থাকা ফল কেনার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। সে সময় মোমেন শেখ বাঁধা দিলে ছিনতাইকারীদের সাথে তার ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা মোমেন শেখের বুকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে ছিনতাইকারীরা মোমেন শেখের মোবাইল ফোন নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মোমেন শেখের স্ত্রী মোছাঃ সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে জিএমপি সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন দুষ্কৃতিকারীর বিরুদ্ধে ছিনতাইসহ হত্যা মামলা দায়ের করে {মামলা নং-২০ (০৭)}। আলোচিত ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনার রহস্য উম্মোচনের জন্য র্যাব-১ ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং আসামী গ্রেপ্তার করতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২২ জুলাই রাতে র্যাব-১ এর গাজীপুরের পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল ঢাকার দক্ষিণখান ও গাজীপুরের মাজুখান এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই হত্যাকান্ডের মূল আসামীসহ অন্যদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।