পূর্বাচলে ৬৩ প্লট বাগিয়ে নেয়া ‘দ্বৈত নাগরিক’ অলি ম্যাজিকে দুদক ম্যানেজ!

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : রাজউক পূর্বাচল প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিক না হয়েও ৬৩টি প্লট বাগিয়ে নিয়েছেন স্থানীয় নাগরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ অলিউল ইসলাম অলি। স্ত্রী ভাই-বোন, শ্বশুর-শাশুড়ি, ভাইয়ের স্ত্রী, শ্যালিকাসহ আত্মীয়স্বজনের নামে ১২৬ কোটি টাকার প্লট বাগাতে জড়িয়েছেন বেশুমার জাল-জালিয়াতিতে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রকৃত আদি বাসিন্দাদের ঠকিয়ে শুধু প্লট বাগিয়ে থামেননি। তিনি সরকারি ক্ষতিপূরণের বিপুল টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন। স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত আদি বাসিন্দাদের গুরুতর এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে ২০২১ সালের অক্টোবরে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থার উপপরিচালক মো. রফিকুজ্জামানকে অুনসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রায় ২ বছরের মাথায় অভিযোগ নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেন তিনি। এরই মধ্যে অভিযোগ নথিভুক্ত করতে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। ভুক্তভোগীদের দাবি, ‘অলি ম্যাজিকে’ ম্যানেজ হয়ে গেছে দুদক। তাই গুরুতর এই দুর্নীতিতে জড়িতরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এছাড়াও অভিযোগ আছে, মোহাম্মদ অলিউল ইসলাম অলি বাংলাদেশ ও আমেরিকার দ্বৈত নাগরিক। ২০২০ সালে এ তথ্য গোপন করে নাগরী ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন অলিউল ইসলাম অলি।
এদিকে, ৭ জুন নতুন অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে সত্য উদ্ঘাটনের দাবি জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। দুদক থেকে পাওয়া উল্লিখিত অভিযোগ ও এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্তের সূত্র ধরে এক অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে প্রকল্প এলাকায় নাগরী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কিংবা তার পৈতৃক নিবাস ছিল না। ছিল না এক টুকরো জমিও। এরপরও ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ উপায়ে ক্ষতিগ্রস্ত আদি বাসিন্দা কোটায় একের পর বাগিয়ে নিয়েছেন প্লট। এ কাজে জেলা প্রশাসক অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে জাল কাজগপত্র তৈরির অভিযোগ আছে। সরেজমিন স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আলাপকালে এ সম্পর্কিত চাঞ্চল্যকর তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. রফিকুজ্জামান কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে আপনি অভিযোগ নথিভুক্ত করার সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন-এই প্রশ্নের জবাবে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এই অভিযোগ কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। এমন অভিযোগ মিথ্যা।’
জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে স্থানীয় বড়কাউ গ্রামের আদি বাসিন্দা জাইদুল ইসলাম ৬৩টি প্লট জালিয়াতির তথ্য-প্রমাণসহ দুদকে অভিযোগ জমা দেন। এই অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিটি গঠন করে কমিশন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অনুসন্ধান কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান শুরু থেকে রহস্যজনক আচরণ করতে থাকেন। ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ সংক্রান্ত সব ধরনের দালিলিক তথ্য-প্রমাণ ও জবানবন্দি দিয়ে অনুসন্ধান কাজে সহযোগিতা করতে চাইলেও অনুসন্ধান কর্মকর্তা তা এড়িয়ে যান। অলির জাল-জালিয়াতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতির খবর এলাকার সবারই জানা।
দুদকের নথিপত্রে দেখা গেছে, দায়িত্ব পাওয়ার পর অনুসন্ধান কর্মকর্তা অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য নেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া শুরু করেন। নোটিশপ্রাপ্তদের মধ্যে অলি চেয়ারম্যান ছাড়াও একাধিক ব্যক্তি রয়েছেন। গত বছরের ১৮ মে অভিযোগসংশ্লিষ্ট স্থানীয় বড়কাউ গ্রামের কাজিমউদ্দিন মিয়ার ছেলে আরিফুল ইসলাম, দিগেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে উজ্জ্বল বিশ্বাস, সেলিম মিয়ার মেয়ে সানজিদা আক্তার শাম্মী, আনোয়ার হোসেনের মেয়ে রুনা আক্তার, জিন্নাত আলীর মেয়ে খোদেজা খাতুন রেহেনা, নূরুল হকের স্ত্রী মাসুদা আক্তার, ফজলুল হকের মেয়ে ফাহমিদা হক, খালেক মোল্লার ছেলে মোমেন মোল্লা, পাড়াবর্তা গ্রামের বাসিন্দা নূর ইসলাম সরকারের ছেলে সুমন সরকারসহ অনেককেই নোটিশ করে দুদকে তলব করা হয়।
নোটিশে বলা হয়, নাগরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অলিউল ইসলাম অলি গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়, ঢাকার এলএ কেস নং-২/০১-০২, ৩/১০-০২ ও ৭/০১-০২ এর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি না হওয়া সত্ত্বেও জাল-জালিয়াতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মীয়স্বজনদের নামে ৬৩টি প্লট হাতিয়ে নেওয়াসহ বিপুল অঙ্কের সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ। বর্ণিত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে আপনার বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। উল্লিখিত অভিযোগ বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের নিমিত্ত রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর অধিবাসী হিসাবে আপনার নামে প্লট বরাদ্দের সপক্ষে যাবতীয় রেকর্ডপত্রসহ দুদক প্রধান কার্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য অনুরোধ করা গেল।
অভিযোগ আছে, নোটিশ জারির পরই অনুসন্ধান কর্মকর্তাসহ অন্যদের ম্যানেজে মরিয়া চেষ্টা শুরু করেন অলি চেয়ারম্যান। একপর্যায়ে ‘অলি ম্যাজিকে’ অনুসন্ধান কর্মকর্তাসহ প্রভাবশালীরা ধীরে চলতে থাকেন।
জানা গেছে, অভিযোগসংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে সম্প্রতি অনুসন্ধান কর্মকর্তা একটি প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করেছেন। তাতে জড়িতদের ‘দায়মুক্তি’ দিয়ে অভিযোগ নথিভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এতে সায় দিয়েছেন দুই কমিশনার। এখন চেয়ারম্যানের অনুমোদন পেলে ধামাচাপা পড়ে যাবে আলোচিত এই প্লট জালিয়াতির ঘটনা। তবে তিনি চাইলে নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে ফের অভিযোগ অনুসন্ধান চালিয়ে সত্য উদ্ঘাটন করার সুযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানে প্রাপ্ত নথিতে দেখা গেছে, রাজউক ২০২১ সালে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে আদি বাসিন্দা কোটায় ৮৯৯টি প্লট বরাদ্দ দিয়েছে। এরমধ্যে নাগরী ইউনিয়নের আলোচিত চেয়ারম্যান অলি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ৬৩টি প্লট বাগিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্লট পেয়েছেন অলির স্ত্রী আরণি (আবেদন সিরিয়াল নং ৭১৬, কোড ২০২৪৫১)। অলি চেয়ারম্যানের ভাই আলিউল ইসলাম (আবেদন সিরিয়াল নম্বর ৪৪৩, কোড ২০১৯২২), আরেক ভাই পুলিশ কর্মকর্তা রহমত উল্লা মিয়া (আবেদন সিরিয়াল নং ৪৬৬, কোড ২০১৯৪৯), বোন মিনারা আক্তার (আবেদন সিরিয়াল ৪৬৯, কোড ২০১৯৫৩), নার্গিস (আবেদন সিরিয়াল ৪৪৪, কোড ২০১৯২৩), ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সানজিদা আক্তার শাম্মীসহ (আবেদন সিরিয়াল নং ৪৬৮, কোড ২০১৯৫১) চাচাতো ভাই, শ্বশুর-শাশুড়ি, শ্যালিকা, ফুপু শাশুড়ি, খালা, মামি, মামাতো বোনের নামে ৩১টি প্লট বাগিয়েছেন অলি। এরা কেউই পূর্বাচল প্রকল্প এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা নন। সেখানে তাদের জায়গা ও ঘর ছিল না। অলি তার ক্ষমতাবলে জেলা প্রশাসক অফিসের এলএ শাখার অসৎ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে জাল কাগজপত্র বানিয়ে এদের নামে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে নতুন প্লটের জন্য আবেদন করেন। এছাড়াও অলির বন্ধু সরকারি দলের স্থানীয় নেতা হাবিবুর রহমানের পরিবারের ১১ সদস্যের নামে প্লট বাগিয়ে নিয়েছেন অলি। হাবিবুর রহমানের পরিবারের যাদের নামে প্লট হাতিয়ে নিয়েছেন তারা হলেন-নূরে ইশরাত জাহান, জিল্লুর রহমান, আতাউর রহমান, মতিউর রহমান, মোক্তার হোসাইন, বেলায়েত হোসাইন, সুরাইয়া আক্তার নার্গিস, রাকিব হোসাইন, হাবিবুর রহমান ও বিল্লাল হোসাইন। অন্যদের নামে ২১টি প্লট হাতিয়ে নেন অলি।
কালীগঞ্জের বড়কাউ গ্রামের বাসিন্দা মজিবুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে জানান, হাবিবুর রহমানের বাড়ি নাগরী ইউনিয়নের তালিয়া গ্রামে। প্রকল্প এলাকায় তার কোনো জায়গা, বাড়ি-ঘর ছিল না। এরপরও তার পরিবারের ১১ সদস্য কিভাবে প্লট পেয়েছেন তা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। এরা কিভাবে প্লট পেয়েছে সে সংক্রান্ত নথিপত্র নিয়ে দুদক যাদের তলব করেছিল তারা কেউ দুদক প্রধান কার্যালয়ে হাজির হননি। তিনি বলেন, অনুসন্ধান কর্মকর্তা অলির কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছেন বলে আমরা শুনতে পাচ্ছি। প্রতিবেদন দেওয়ার পর থেকেই অলি এলাকায় গর্ব করে বলছেন, ‘দুদক আমার কিছুই করতে পারবে না। আমার ৪-৫ কোটি টাকা নষ্ট হয়েছে-এই আর কি!’
জানতে চাইলে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও অলি চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠজন হাবিবুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমাকে দুদক ডেকেছিল, আমি যাইনি। আমার ভাইরা গিয়েছিল।
আর প্লট পাওয়ার পরই আমি প্লটের কাগজ দালালদের কাছে বিক্রি করে দেই। তাই পরে কি হয়েছে সেটা আমার আর জানা নেই। প্রকল্প এলাকায় তাদের জায়গা ও ঘর-বাড়ি ছিল বলে দাবি করেন তিনি।’
কালীগঞ্জে চেয়ারম্যানের উস্কানিতে হামলার ঘটনায় চেয়ারম্যানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কাগজপত্র দেখিয়ে প্রকল্প এলাকার আদি নিবাসী মজিবুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ১৩২৯ দাগে ক্ষতিগ্রস্ত হিসাবে তার সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়া কথা ছিল। কিন্তু অলি তার স্ত্রী আরণি, বোন নার্গিস ও বন্ধুর ছোট ভাই জিল্লুর রহমান, মতিউর রহমান ও বেলায়েত হোসেনের নামে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন। পরে তাদের নামে ক্ষতিগ্রস্ত আদি বাসিন্দা কোটায় প্লটও বাগিয়ে নেন। জাল-জালিয়াতি করে প্লট বাগিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মজিবুর রহমান সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করেন। আদালতের নির্দেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এই মামলার তদন্ত করে। মজিবুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তা মামলার সঠিক তদন্ত না করে উলটো অলির সঙ্গে আমাকে আপস করার প্রস্তাব দেন। এর সঙ্গেও কোটি টাকার বিনিময়ের কথাও শোনা গেছে। কিন্তু আমি এতে রাজি না হলে তিনি আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করলে আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’
কে এই অলি : স্থানীয় লোকজন ও দুদক থেকে প্রাপ্ত নথির সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও আমেরিকার দ্বৈত নাগরিক অলিউর ইসলাম অলি। ২০০৯ সালে ছাত্র অবস্থায় ডিবি লটারির মাধ্যমে আমেরিকা পাড়ি দিয়েছিলেন। ২০১৫ সালের ২২ জানুয়ারি ১০ বছর মেয়াদী আমেরিকান পাসপোর্ট ইস্যু হয়েছে মোহাম্মদ অলিউর ইসলাম নামে। ওই পাসপোর্টের মেয়াদোত্তীর্ণ হবে ২০২৫ সালের ২১ জানুয়ারি। আরো জানা গেছে, মোহাম্মদ অলিউর ইসলাম নামে থাকা তার বাংলাদেশী পাসপোর্ট ‘এএ৫৫৭৮১৬৮’ সে সর্বশেষ ২০১৪ সালে ব্যবহার করেছিলো। এরপর থেকে সে আমেরিকান পাসপোর্ট ‘৫০৫৫–০০১’ ব্যবহার করছে। ২০১৮ সালে দেশে ফিরে তিনি বিয়ে করেন রূপগঞ্জের শিমুলিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে আরণিকে। ২০১৯ সালে নাগরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে পেয়ে যান ‘আলাদিনের চেরাগ’। ৯ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফেরার ১ বছরের মধ্যেই ক্ষমতাসীন দলের পদ পাওয়ার মধ্য দিয়ে তার উত্থান শুরু। ২০২০ সালে নাগরী ইউনিয়নের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০২১ সালে চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ফের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে বাড়ে তার দাপট।
জানা গেছে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ২০০৩ সাল থেকে সরকার পারাবর্তা ও বড়কাউ মৌজার জমি রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করে দেয়। তাহলে ২০১৮ সালে বিয়ে করা অলির স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন কিভাবে এই মৌজার জমির মালিক হয়েছেন তা স্পষ্ট ধারণা করা গেলেও দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা কোনো তথ্যই বের করতে পারেননি।
অলি যা বললেন : জানতে চাইলে মোহাম্মদ অলিউল ইসলাম অলি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে দুদকে মিথ্যা অভিযোগ জমা দেয়। দুদক এখনো সেই অভিযোগ তদন্ত করছে। আমাদের এলাকার অনেককেই দুদক ডেকেছে। তারা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বক্তব্য দিয়েছেন।’ আপনি যাদের নামে ৬৩টি প্লট নিয়েছেন এর জন্য প্রকল্প এলাকায় তাদের নামে অন্তত ৩১ বিঘা জমির মালিকানার রেকর্ডপত্র দরকার। অভিযোগ আছে আপনি এদের নামে জাল কাগজপত্র তৈরি করেছেন। আপনি কি এক বিঘা জমির রেকর্ডপত্র দেখাতে পারবেন-এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে তিনি বলেন, ‘আমার নামেতো অভিযোগই দিয়েছে। এটা দুদক তদন্ত করছে। তবে আমার আত্মীয়স্বজনসহ অন্য যারা প্লট পেয়েছেন তাদের আগে থেকেই প্রকল্প এলাকায় জমি ছিল।’ দুদককে ম্যানেজ করার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘অনুসন্ধান কর্মকর্তার সঙ্গে আমার দেখা তো দূরের কথা কোনোদিন কথাও হয়নি।’
এ সংক্রান্ত আরো জানতে………….
পূর্বাচলে চেয়ারম্যান অলির স্বজনদের নামে ৬৩ প্লট, দুদকের অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে
দুর্নীতির মাধ্যমে ৬৩টি প্লট হাতিয়ে নিয়ে দুদকের জালে নাগরীর চেয়ারম্যানসহ তাঁর স্বজনরা!
এলএ শাখার সহযোগীতায় ‘পূর্বাচলে প্রায় সাড়ে ৫শ কোটি টাকা মূল্যের প্লট’ হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা!