‘স্মার্ট পুলিশ বাহিনী’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী বাংলাদেশ পুলিশকে ‘স্মার্ট পুলিশ বাহিনী’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “আমরা অধিকতর দক্ষ, পেশাদার, যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের একটি স্মার্ট সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে দেখতে চাই। আমাদের সর্বশেষ নির্বাচনি ইশতেহারে স্মার্ট পুলিশ গঠনের রূপরেখাও রয়েছে। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ ধাপে ধাপে গ্রহণ করব।
“আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা, তথা আধুনিক ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। দেশের এই অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্যকে স্ব-স্ব স্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।”
‘স্মার্ট পুলিশ স্মার্ট দেশ, শান্তি প্রগতির বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় পুলিশ সপ্তাহ। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে সকালে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন ঘোষণা করে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় পুলিশ বাহিনীর অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, “পুলিশ জনগণের বন্ধু- এটি কাল থেকে কালান্তরের পথ-পরিক্রমায় প্রতিষ্ঠিত একটি সত্য। পুলিশ ও জনগণের বন্ধুত্বের মিথস্ক্রিয়ার মূল ভিত্তি হল পেশাদারিত্ব, সততা, নিষ্ঠা, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, ত্যাগ, বীরত্ব ও দেশপ্রেমের ও মানবীয় মূল্যবোধ। এসকল মানবীয় গুণ ধারণ করে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্বের পরীক্ষায় বারবার উত্তীর্ণ হয়েছে।”
১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, “সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার সেই কালরাতে পুলিশের এএসআই সিদ্দিকুর রহমান ঘাতকদের বাধা দিতে গিয়ে বিনা দ্বিধায় নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। দেশবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তির আগুন-সন্ত্রাস মোকাবিলা ও জঙ্গিবাদ দমনসহ সবধরনের সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন অনেক অকুতোভয় পুলিশ সদস্য।”
পুলিশ বাহিনীকে অত্যাধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ পুলিশে ইতোমধ্যে ডিএনএ ল্যাব, আধুনিক ফরেনসিক ল্যাব, অটোমেরিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম (এএফআইএস) এবং আধুনিক রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন করা হয়েছে। কয়েকটি বিভাগীয় শহরে এই সকল ল্যাবের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ভবিষ্যতে প্রতিটি বিভাগে এ ধরনের ল্যাব স্থাপন করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।
“সাইবার অপরাধ এবং এর সঙ্গে যুক্ত ফাইন্যানসিয়াল ক্রাইম, মানি লন্ডারিং ইত্যাদি অপরাধসমূহ মোকাবিলায় সাইবার পুলিশ সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ডিএমপির সিটিটিসিসহ পুলিশের অন্যান্য ইউনিটও সাইবার অপরাধ দমনে কাজ করছে। পুলিশের একটি পূর্ণাঙ্গ সাইবার পুলিশ ইউনিট স্থাপনের পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে।”
জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ কে আরও সমৃদ্ধ করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পুলিশ সদস্যদের বৈদেশিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্র বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিভাগীয় পর্যায়ে পুলিশ হাসপাতালের উন্নয়নে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ঢাকা বিভাগে একটি বিভাগীয় হাসপাতাল নির্মাণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। অন্যান্য বিভাগীয় শহরেও পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
“পুলিশে একটি পূর্ণাঙ্গ এভিয়েশন ইউনিট গঠনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমে শীঘ্রই দুটি হেলিকপ্টার যুক্ত হতে চলছে।”