বদলির আদেশের এক মাস পরও ছাড়পত্র নিচ্ছে না প্রকৌশলী বেলাল হোসেন!

বিশেষ প্রতিনিধি : বদলির আদেশের পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও ছাড়পত্র নিচ্ছেন না কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ বেলাল হোসেন সরকার। প্রায় ৪ বছরের বেশি সময় কালীগঞ্জ উপজেলায় দায়িত্ব পালনের পর বদলির আদেশের হলেও প্রকৌশলী মোঃ বেলাল হোসেন সরকার আরো কিছুদিন চেয়ার আঁকড়ে ধরে কালীগঞ্জেই থাকেতে চাচ্ছেন বলে এলাকায় প্রচরণা চলছে।

অপরদিকে নতুন সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ইশতিয়াক আহমেদ কর্মস্থলের দায়িত্ব বুঝে না পেয়ে অপেক্ষমান রয়েছেন।

জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার নতুন সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ইশতিয়াক আহমেদ বর্তমানে এলজিইডির গাজীপুর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় যোগদান করে কালীগঞ্জের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অপেক্ষমান রয়েছেন। ইশতিয়াক আহমেদ সর্বশেষ মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষ করে কালীগঞ্জে যোগদানের অপেক্ষায় ঝুলে রয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ মার্চ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলি আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

একই দিন পৃথক এক আদেশে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ বেলাল হোসেন সরকারকে চাঁদপুর সদরে বদলি করা হলেও তিনি এখনো পর্যন্ত কালীগঞ্জে রয়েছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে তদবির করে তিনি কালীগঞ্জে থাকার জন্য চেষ্টা করছেন বলেও গুঞ্জন উঠেছে।

জানা গেছে, মোহাম্মদ বেলাল হোসেন সরকার ২০২০ সালের ৫ মার্চ কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন৷ এরপর থেকে তিনি টানা ৪ বছর ১ মাসের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্বরত অবস্থায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি এবং সিন্ডিকেট করে কতিপয় অসাধু ঠিকাদারকে কাজ পায়িয়ে দেয়ার অভিযোগও উঠেছে একাধীকবার। এমন বেশ কিছু অভিযোগ নিয়ে ইতিপূর্বে একাধীকবার গণমাধ্যমের শিরোনামও হয়েছেন প্রকৌশলী বেলাল হোসেন সরকার। পরে তাঁর বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশল (চ.দা) মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ১০ জুলাই মাসে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশল মোহাম্মদ রেজাউল করিম সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।

বদলির আদেশের এক মাস পরও ছাড়পত্র না নেয়ার বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ বেলাল হোসেন সরকার বলেন, ”এমপি স্যার সিগন্যাল না দিলে তো যেতে পারছি না। আমার হাতে করার কিছুই নেই। হয়তো এমপি স্যার জুন ক্লোজিং-এর জন্য আমাকে আটকে রেখেছেন। এমপি স্যার চাইলেই চলে যাবো। তবে তদবির করে থেকে যাওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন৷

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের গাজীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীর বদলির আদেশ হয়েছে। তবে তার কিছু পেন্ডিং কাজ বাকি রয়েছে। বেলাল হোসেন সব কিছু বুঝিয়ে দিলেই নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ইশতিয়াক আহমেদ যোগদান করবেন৷ তিনি বর্তমানে জেলা কার্যালয়ে রয়েছেন।

গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারউজ্জামান বলেন, হঠাৎ করেই রোজার মধ্যে প্রকৌশলীর বদলির আদেশ হয়। সে সময় তিনি আমাকে অনুরোধ করে বলেন স্যার একটু ভালো যায়গায় যেতে চাই একটু সময় দেন। আমার সঙ্গে এর বেশি কথা হয়নি। তিনি আরো বলেন, তাকে আমি আটকে রাখিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button