কালীগঞ্জের বাচ্চুসহ নরসিংদীতে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কালীগঞ্জের মো. বাচ্চু মিয়াসহ দুজনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

রোববার ভোরে নরসিংদী সদর উপজেলায় মাধবদী থানার নুরালাপুর এবং গত শনিবার রাতে মহিষাসুরা এলাকায় এই দুটি ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন কালীগঞ্জ উপজেলার মনসুরপুর গ্রামের (বাইপাস সড়ক সংলগ্ন এলাকার) মৃত কাবিল উদ্দিনের ছেলে মো. বাচ্চু মিয়া (৫৫) এবং নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা ইউনিয়নের ভাটপাড়া এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে মো. নুরুল ইসলাম (৫২)।

স্থানীয় মানুষের ভাষ্য, বাচ্চু মিয়াকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর নুরুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার পর তাঁর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার ভোরে সদর উপজেলায় মাধবদী থানার নুরালাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা হোসেন নামের এক ব্যক্তির বাড়ির ঘরে ঢোকেন বাচ্চু মিয়া। চোর সন্দেহে ওই পরিবারের সদস্যরা তাঁকে আটক করে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন। একপর্যায়ে গুরুতর আহত হয়ে পড়লে বাচ্চু মিয়াকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হলে হাসপাতালের ফটকে রেখে তাঁরা পালিয়ে যান। পরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে মাধবদী থানার এসআই ফজলে রাব্বি হাসপাতালে গিয়ে তাঁর লাশ মর্গে পাঠান। আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে বাচ্চু মিয়ার পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

এসআই ফজলে রাব্বি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, হাসপাতালের গেটে বাচ্চু মিয়াকে রেখেই পালিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। পরে তাঁরা ওই বাড়িতে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখতে পান। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, বাচ্চু মিয়াকে মারধরে অংশ নিয়েছেন পরিবারটির পাঁচ থেকে ছয়জন সদস্য।

অপরদিকে শনিবার রাতের কোনো এক সময় কয়েকজন যাত্রী নিয়ে মহিষাসুরা ইউনিয়নে যান অটোরিকশাচালক নুরুল ইসলাম। ইউনিয়নের ৬ নম্বর সেতু এলাকার নির্জন সড়কে পৌঁছার পর নুরুল ইসলামকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন ওই যাত্রীরা। এ সময় তাঁর মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়েছে। একপর্যায়ে তিনি নেতিয়ে পড়লে তাঁর অটোরিকশা ছিনিয়ে নিয়ে যান যাত্রীরা। গতকাল রোববার সকালে খবর পেয়ে স্বজনেরা নুরুলের লাশ নিয়ে বাড়ি যান।

বিষয়টি জানতে পেরে মাধবদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইলিয়াস আহমেদ ওই বাড়িতে গিয়ে তাঁর লাশ উদ্ধার করেন। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠান।

এসআই ইলিয়াস আহমেদ বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। সুরতহাল করার সময় লাশ দেখে তাঁর মনে হয়েছে, মারধর করার সময় নুরুলের গলায় রশিজাতীয় কিছু পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। অটোরিকশাটি ছিনিয়ে নেওয়ার জন্যই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মাহমুদুল কবির বাসার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, দুজনের লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। তাঁদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। এরই মধ্যেই দুজনের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) অনির্বাণ চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে। পৃথক দুটি হত্যাকাণ্ডে যারাই জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Related Articles

Back to top button