জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনে ‘টিকিট চেকিংয়ের’ নামে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা!
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনে ‘বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ’ করা যাত্রীদের চেকিংয়ের নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্টেশনে দায়িত্বরত সব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।
চেকিং করলেই আয় করা যায় হাজার হাজার টাকা, তাই জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনে অতি উৎসাহী হয়ে চেকিংয়ের কাজটাই করছেন বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী।
উত্তরবঙ্গসহ ময়মনসিংহ জামালপুরের প্রায় ৭২টি যাত্রীবাহী ট্রেন থামে জয়দেবপুর জংশনে। ট্রেন থামলেই স্টেশনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেখা যায় চেকিংয়ের নামে টাকা আদায়ের দৃশ্য।
তাদের গলায় ঝুলানো থাকে রেলওয়ে লেখা ফিতা আর পকেটে পদবি সম্বলিত আইডি কার্ড।
মঙ্গলবার বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জয়দেবপুর স্টেশন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
অভিযোগ উঠেছে, প্রতিদিন বিনা টিকিটের যাত্রীদের নিকট প্রায় ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা উঠানো হয় বিপরীতে সরকারি কোষাগারে জমা হয় মাত্র দুই-আড়াই হাজার টাকা। বিপুল অংকের টাকা জয়দেবপুর স্টেশনে কর্তব্যরত একটা চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে।
এর মধ্যে যাদের নামে অভিযোগ উঠেছে তারা হলেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এসআই আশরাফুজ্জামান লস্কর, সিপাহী মজিদ, মঞ্জু, কামাল ও সফিকুল ইসলাম, টিকেট কালেক্টর সজীব, সহকারী টিকেট কালেক্টর জহির, টিকেট বিক্রেতা তুহিন, ওয়েম্যান ইনচার্য মিজান, পয়েছম্যান সাহেব আলী, সিরাজ, জয়দেবপুর বাজার রেলগেট কিপার রাসেল।
মঙ্গলবার যাত্রীদের কাছ থেকে রিসিট ছাড়া টাকা আদায় করতে গেলে সাংবাদিকের নজরে পড়লে অনেকে সটকে পড়ে দেয় ভোঁদৌড়। এমনই ভিডিও ফুটেজ রয়েছে আমাদের সংরক্ষণে। কিন্তু পরক্ষণে তারা সংগঠিত হয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা এক সংবাদকর্মীকে মারধর করে ২টা মোবাইল ও নগদ ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
অবশ্য ঘটনার পর গেটকিপার রাসেলকে মঙ্গলবার রাতেই বরখাস্ত করেছে বলে জানিয়েছে কর্তব্যরত স্টেশন স্টেশন মাস্টার মো. শাজাহান মিয়া।
তিনি জানান, স্টেশনে অনাকাঙ্ক্ষিত যে কোনো ঘটনার জন্য দায়ভার আমাকেই নিতে হয়। তাই আমি বিষয়টি মিমাংসা করতে গিয়ে মোবাইল দুইটি ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করেছি।
স্থানীয় সংবাদিকদের হস্তক্ষেপে মোবাইল ফেরত পেলেও ফিরে পাননি মানিব্যাগে রাখা নগদ ১৫ হাজার টাকা, সাংবাদিকতার কার্ড, জাতীয় পরিচয়পত্র ও প্রয়োজনীয় কিছু ভিজিটিং কার্ড।
স্টেশন মাস্টার শাজাহান মিয়া বলেন, স্টেশনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) টিকেট কালেক্টরদের সহযোগিতা করে।
তিনি আরও জানান, মাসে দেড় লক্ষ টাকার টার্গেট রয়েছে বিনা টিকেটে ভ্রমণ করা যাত্রীদের থেকে আদায় করার। কিন্তু তাদের খাতায় দেখা গেছে দৈনিক দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা বিনা টিকেটে ট্রেনে ভ্রমণকারী যাত্রীদের নিকট থেকে আদায় করেছে।
এ বিষয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চিফ কমান্ডেন্ট আল ফাত্তাহ জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।