বেকায়দায় টিউলিপ, পড়তে পারেন শাস্তির মুখে

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক (৪২) যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের (ট্রেজারি) অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মন্ত্রী হিসেবে দেশটির আর্থিক খাতের অপরাধ-দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন তিনি। কিন্তু এসময় তার খালা ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনে বেশ বেকায়দায় পড়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। বিশেষ করে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের থেকে ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার খবর প্রকাশের পর তদন্তের মুখে পড়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক।
সম্প্রতি ফিন্যান্সিয়াল টাইমসসহ একাধিক গণমাধ্যমে যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের কাছ থেকে সম্পত্তি উপহার নেওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ফ্ল্যাট উপহারের ঘটনায় বেকায়দায় পড়তে পারেন টিউলিপ সিদ্দিক।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে টিউলিপ ২০০৪ সালে কিংস ক্রসের কাছ থেকে কোনোরকম অর্থ প্রদান ছাড়াই দুই শয়নকক্ষ বিশিষ্ট একটি অ্যাপার্টমেন্ট পেয়েছিলেন। ব্রিটেনের ভূমি নিবন্ধন সংক্রান্ত নথিপত্রের বরাতে ওই তথ্য প্রকাশ করেছিল গণমাধ্যমটি। নথির তথ্যানুযায়ী, অ্যাপার্টমেন্টটি টিউলিপকে উপহার দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামে এক আবাসন ব্যবসায়ী, যার সঙ্গে টিউলিপের খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগসূত্র রয়েছে।
গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর হাসিনা ও তার পরিবারের ব্যক্তিদের বিতর্কিত এসব সম্পত্তির কথা সামনে এসেছে। এসব তথ্য প্রকাশ্যে আসায় টিউলিপের ওপর তদন্তের চাপ বাড়ছে। এছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের দায়েও টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এদিকে, লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বোনের নামেও বিনামূল্যে পাওয়া ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে শনিবার (৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য সানডে টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিউলিপ উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেডের এমন একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন, যেটি তার পরিবারকে দিয়েছেন তার খালা শেখ হাসিনার এক মিত্র। হ্যাম্পস্টেডের ফিঞ্চলে রোডের এই ফ্ল্যাট টিউলিপের বোন আজমিনাকে বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছিল।
ব্লুমবার্গ বলছে, এই অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি টিউলিপ। তবে তার একজন মুখপাত্র ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের কাছে দাবি করেছেন, টিউলিপ সিদ্দিকের এই সম্পত্তি বা অন্য যেকোনো সম্পত্তির মালিকানার সঙ্গে আওয়ামী লীগকে সমর্থনের ধারণাটি স্পষ্টতই ভুল হবে।
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের একজন এমপির বিরুদ্ধে এমন বিতর্কিত সম্পদের তথ্য সামনে আসার ঘটনা দেশটির সরকারের জন্যও বেশ বিব্রতকর। আর টিউলিপের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি শাস্তির মুখে পড়তে পারেন। তবে, টিউলিপের ওপর নিজের আস্থা কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।