জামায়াত নেতার মাছ লুটে নিল বিএনপি কর্মী!

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের ঘেরের মাছ মনে করে জামায়াত নেতার মাছ লুটে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এমনই ঘটনার অভিযোগ উঠেছে যশোরের মনিরামপুর উপজেলায়।
গত শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার কালিবাড়ি মোড় হতে কপালিয়া বাজারে বিক্রির উদ্দেশে নসিমনে করে মাছ আড়তে নেওয়ার পথে এ ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি রবিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে প্রকাশ্যে জানাজানি হয়।
স্থানীয়রা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যের বাড়ি মনিরামপুরের দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নে। স্থানীয় ঘুঘুদা বিলে তার মাছের ঘের রয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে স্থানীয় তৌহিদ নামে এক ব্যক্তির কাছে ঘের দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান লেখক। তৌহিদ ঘেরের মাছ ধরে বিক্রি করেন। এতে বিএনপির কয়েকজন বাধা দেন। একপর্যায়ে শনিবার দুপুরে লেখক ভট্টাচার্য্যের ঘের থেকে মাছ ধরে নসিমনে করে কপালিয়া বাজারে বিক্রির উদ্দেশে পাঠানো হয়।
এদিকে একই সময়ে নিজেদের ঘেরের মাছ ধরে অন্য এক নসিমনে করে কপালিয়া বাজারের আড়তে পাঠান জামায়াত নেতা লিয়াকত হোসেন ও আবু নসরসহ ঘেরের অংশীদাররা। পথিমধ্যে জামায়াত নেতাদের সেই মাছ লুট করে নেয় স্থানীয় বিএনপির কর্মী পরিচয় দেওয়া মাহবুর রহমান, রাজীবসহ কয়েকজন। যার দৃশ্য মনোহরপুর বাজারের সিসি টিভির ফুটেজে ধরা পড়েছে।
মূলত লেখক ভট্টাচার্য্যের ঘের থেকে ধরা মাছ লুট করতে গিয়ে তথ্যের ভুলে জামায়াত নেতার মাছ লুটের ঘটনা ঘটে। পরে শনিবার রাতে এক সালিশ বৈঠকের মাধ্যকে টাকা ফেরত দেন মাছ লুটে অভিযুক্তরা।
এ বিষয়ে কুলটিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক আবু নসর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এলাকায় আমাদের তিনটি ঘের আছে। আমাদের সাবেক থানা আমীর লিয়াকত হোসেনসহ কয়েকজন অংশীদার মিলে ঘেরে মাছ চাষ করি। শনিবার দুটো ঘের থেকে ১৮-২০ মণ মাছ ধরে নসিমনে করে কপালিয়া বাজার আড়তে বিক্রির জন্য পাঠাই। রাস্তায় কিছু লোক নসিমনসহ মাছ ছিনিয়ে নিয়ে ৯৩ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। চাপ দিয়ে তাদের কাছ থেকে ৮৯ হাজার টাকা উদ্ধার করেছি। এলাকার কিছু লোক এর সাথে জড়িত আছে। সব তথ্য উদ্ধারের পর নিজেরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে থানায় অভিযোগ করার কথা ভাবছি।’
নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, শনিবার বিকালে জামায়াত নেতা লিয়াকত হোসেনের কাছে মাছ ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনে আমরা তৎপর হই। পরে সিসি টিভির ফুটেজ দেখে মাহাবুব ও রাজিব নামে দুইজনকে চিহ্নিত করা হয়। আমরা তাদের কাছ থেকে মাছ বিক্রির টাকা উদ্ধার করে লিয়াকত হোসেনকে বুঝিয়ে দিয়েছি। রাজিব ও মাহাবুব বিএনপির রাজনীতি করে। তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তবে মাছ লুটের কোন ঘটনা এখনও জানেন না মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান তিনি।