যোগদানের এক মাসেই আলোচনায় নওগাঁ সদর থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : বর্তমানে নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে কর্মরত পরিদর্শক সোহরাওয়ার্দী হোসেন। তিনি নাটোরের গুরুদাসপুরের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ থেকে অনার্স, মাস্টার্স সম্পন্ন করে ২০০১ সালে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে যোগদান করেন তিনি। চাকুরীর সূত্রে ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন থানা এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অত্যন্ত চৌকস পুলিশ অফিসার হিসেবে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন আগেই।
এরপর ২০১৯ সালের ২৩শে জুন নওগাঁ সদর থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন। নওগাঁ সদর থানায় যোগদানের দিনই একটি চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ঘটে। উপজেলার শৈলকুপা গ্রামে রাসেল হোসেন (১৫) নামে এক স্কুল ছাত্রকে গলা কেটে হত্যা করা করা হয়। খুনের ঘটনানাটি সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করার আগেই ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দক্ষতার প্রমাণ দেন তিনি। খুনের সাথে জড়িত ৩ জন আসামী বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।
নওগাঁ সদর থানায় যোগদানের পরেই তিনি মাদক, জুয়া, সন্ত্রাস, চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি ও জুলুমবাজের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন। এরপর থেকেই শুরু হয় বিভিন্ন এলাকায় তাঁর পুলিশি এ্যাকশন। তার নেতৃত্বে গত একমাসে বিভিন্ন মামলার ৫২২ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন তিনি।
জানা গেছে, গত ঈদুল ফিতরের আগে ১৯ জুন মো. শাহিন হোসেন (২৯) নামের এক ব্যক্তি জাল টাকা বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। ঘটনার খবর পেয়ে ওসির নেতৃত্বে এস.আই নাজমুল জান্নাত শাহ পার নওগাঁ মেরী গোল্ড পাড়া থেকে শাহিন হোসেন কে দুই লাখ ৩০হাজার ৮শ টাকা সহ তাকে হাতে নাতে আটক করতে সক্ষম হয়। এছাড়া পাহাড়পুর বাজার হতে রাসেল হোসেন (২৭) নামে এক ব্যক্তিকে ২হাজার টাকা জাল নোটসহ আটক করা হয়।
অপরদিকে, গত ৩০ মে পাহাড়পুর হতে ডাকাতি প্রস্তুতিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৫জন ডাকাতকে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রসহ আটক করে এস.আই জালাল হেসেন। চৌকস পুলিশ অফিসার সোহরাওয়ার্দী হোসেন নওগাঁ সদর থানায় ওসি হিসেবে যোগদানের পর থেকে শুরু করেন চিরুনি অভিযান।
গত এক মাসে তিনি মাদক মামলার সাথে জড়িত ৯৭জন, জিআর/সিআর পরোয়ানাভুক্ত আসামী ৩২৪জন, বিভিন্ন মেয়াদে জিআর/সিআর সাজা পরোয়ানাভুক্ত আসামী ৭জন, খুনের মামলায় গ্রেফতার ৩জন, ডাকাতি প্রস্তুতিকালে ৫জন ডাকাত, পূর্বের মামলায় ২৮জন, ৩৪ধারায় ২৩জন, জাল টাকা সংক্রান্তে গ্রেফতার ২জন, ভ্রাম্যমান ৩১জন এবং বাল্য বিয়ে সংক্রান্তে ১জনসহ মোট ৫২২জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এছাড়া, বাল্য বিয়ে রোধ সংক্রান্ত ভ্রাম্যমান আদালতে ৪৫হাজার টাকা আদায়, বিভিন্ন মাদক সেবী ও অপরাধীকে ভ্রাম্যমান আদালতে ১৫ হাজার ৩শ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এবং ২লাখ ৩২হাজার ৮শ টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া, মোটর সাইকেল প্রসিকিউশন ৯৮টি, ১ কেজি ১৭০গ্রাম গাজা উদ্ধার, ২০৭পিস ইয়াবা, ২৪৮গ্রাম হেরোইন, ৫০পিচ এ্যাম্পুল, ৩ বোতল ফেনসিডিল ও ৮৮লিটার চোলাই মদসহ প্রায় সাড়ে ৯লাখ টাকার মাদক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
নওগাঁ সদর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, আমি নওগাঁ সদর থানায় যোগদানের পর থেকে দেখি প্রচুর মামলা জমা পড়ে আছে। এর মধ্যে মাদক মামলা বেশি আমি আমার পূর্বের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আসামিদের আটক করতে সক্ষম হই। এবং তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে বর্তমানে তারা কারাগারে আছে।
এ মাসেই ৬৩টি মাদক মামলা রুজু হয়েছে। অভিযান অব্যহত রয়েছে, আশা করছি কয়েক মাসের মধ্যেই সদর থানাকে আমরা মাদক মুক্ত করতে পারব।