যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসনে নেমেছে ঐক্যফ্রন্ট: প্রধানমন্ত্রী

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসনে নেমেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, ঐক্যফ্রন্ট আজ যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসনে নেমেছে। তাদের আদর্শহীনতা কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে! তারা কিসের লোভে দুর্নীতিবাজদের সাথে হাত মিলিয়েছে? অপরাধীদের উদ্ধার করতে নেমেছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা?

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীরা কী করে মনোনয়ন পেলো? ঐক্যফ্রন্ট নেতারা তো দিকভ্রষ্ট, আদর্শহীন। এরা মানুষকে কিছু দিতে পারবে না। এদের কাছে দেশবাসীর চাওয়ারও কিছু নাই। মানুষ ভালো থাকলে তাদের ভালো লাগে না।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে কোনো পরিবর্তনের কথা বলছেন তারা…? জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের মাধ্যমে দেশকে পিছিয়ে দিয়ে পরিবর্তন? আর কোথায় স্বৈরাচারী অবস্থান দেখেন তারা?

‘লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে আমাদের বিজয় এলেও, পঁচাত্তরের পর সেই স্বর্ণালী ইতিহাস মুছে ফেলে নতুন প্রজন্মকে মিথ্যা দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে তৎকালীন অপশক্তি পরিচালিত সরকার। স্বাধীনতার সুফল একে একে নস্যাৎ করতে চেয়েছিলো তারা।’

২০০১ সালে চার দলীয় জোট সরকারের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০১ এ ক্ষমতায় তারা জনগণের ভোটে আসেনি। তাই জবাবদিহিতাও ছিলো না জনগণের কাছে। সেজন্য খুন-হত্যা-লুট ও সন্ত্রাস করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছিলো বিএনপি-জামায়াত সরকার।

‘একাত্তরে ছিলো খান সেনাদের অত্যাচার আর ২০০১ এ বিএনপির অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছে দেশের মানুষ। দুর্নীতি-হত্যা-খুন নিয়েই রাজনীতি করেছে বিএনপি। তাদের ভোটে জেতার মতো আত্মবিশ্বাসও ছিলো না,’ যোগ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ১০ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশের কপালে যে দুর্নীতিগ্রস্তের তকমা ছিলো- তা দূর করা হয়েছে। মানুষের জীবনমানে আজ পরিবর্তন হয়েছে। তারা আজ আশাবাদী হতে পারে, আস্থার ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে।

‘সাধারণ মানুষ আর তৃণমূলের উন্নয়নই ছিলো আমাদের মূল লক্ষ্য। হাওয়া ভবনের মতো কোনো দুর্নীতির কারখানা আওয়ামী লীগ নেয়নি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধী দল আমাদের সমালোচনা করবে এটাই স্বাভাবিক। তারা নির্বাচনকে বানচাল করতে চেয়েও পারেনি। কেননা, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে মানুষ নৌকাকে বেছে নিয়েছিলো দেশের অগ্রগতির জন্য।

‘ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে তারা দেশব্যাপী অগ্নি-সন্ত্রাস শুরু করেছিলো। মানুষ হত্যায় মেতে ওঠেছিলো। ক্ষমতায় থাকতে দেশের সম্পদ লুট, আর ক্ষমতার বাইরে থাকতে জ্বালাও-পোড়াও এবং দেশের সম্পদ ধ্বংস করেছে। তারা কী করে দেশের মানুষের কাছে ভোট চাইবে?’

শেখ হাসিনা বলেন, আজ দেশের সত্যিকারের পরিবর্তন হয়েছে। দেশের সব ক্ষেত্রেই আজ উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। মানুষের যে সত্যিকারের উন্নয়ন, তা তো আওয়ামী লীগই এনে দিয়েছে। আমাদের লক্ষ্যই হলো- দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়া।

দেশের উন্নয়নে ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে দারিদ্র্যমুক্ত হবে বাংলাদেশ-এটাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য। কারণ আওয়ামী লীগ চায় দেশের হতদরিদ্র্য মানুষ স্বাবলম্বী হোক। তৃণমূলের মানুষ আজ সবচেয়ে বেশি উপকৃত।

‘বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে৷ দেশের মানুষের ওপর আমার আস্থা আছে৷ তাদের সাংবিধানিক অধিকার অার কাউকে কেড়ে নিতে দেওয়া হবে না৷’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা সরকার গঠন করবেন ভালো কথা। কিন্তু তাদের প্রধান কে হবেন- তা জানেন না তারা। দেশের মানুষকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ অামার বিশ্বাস, দেশের মানুষ ভুল সিদ্ধান্ত নেবে না। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যাতে কেউ থামিয়ে দিতে না পারে- সেজন্য অারো পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকা প্রয়োজন অাওয়ামী লীগের।

এজন্য আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button