দাঙ্গা ঠেকাতে ফ্রান্সে জরুরি অবস্থা জারির সম্ভাবনা
গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নাগরিক অসন্তোষ প্রশমন ও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একের পর এক সংঘর্ষ থামাতে জরুরি অবস্থা জারির কথা ভাবছে ফ্রান্সের সরকার। দাঙ্গাকারীদের হাতে ভাংচুর হওয়া ফ্রান্সের মর্যাদাপূর্ণ স্থাপনা আর্ক দো ট্রিয়ফ পরিদর্শন করেছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। খবর রয়টার্স।
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ফ্রান্সজুড়ে সরকারবিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে। এসব প্রতিবাদ বিক্ষোভে ট্যাক্সিচালকদের ব্যবহূত ইয়েলো ভেস্ট পরে অংশগ্রহণ করছে প্রতিবাদকারীরা। প্রতিবাদটি এরই মধ্যে ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
চরম ডান ও বামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর পাশাপাশি সহিংস দুর্বৃত্তরাও এ ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে দাঙ্গা সৃষ্টি করছে বলে ধারণা পুলিশের। শনিবারও মুখোশ পরা একদল তরুণকে হাতে ধাতব লাঠি ও কুড়াল নিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। প্যারিসের রাস্তায় এদিনের সহিংসতায় বেশ কয়েকটি যানবাহন ও ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ১৯৬৮ সালের ছাত্র বিক্ষোভের পর ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলন হচ্ছে ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় কোনো আন্দোলন। মাখোঁ সরকারের সামনে এ আন্দোলনটি বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে মাখোঁ ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা এক জরুরি বৈঠকে বসতে পারেন এবং জরুরি অবস্থা জারির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সরকার সংলাপের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে তারা তাদের পথ পাল্টাবে না বলে জানিয়েছেন সরকারের মুখপাত্র বেনিয়ামিন গ্রিভু।
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত ১৭ নভেম্বর বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে তা পুরো ফ্রান্সে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা ফ্রান্সের বিভিন্ন অংশের সড়ক অবরোধ করে এবং বিভিন্ন শপিং মল, কারখানা ও জ্বালানি ডিপোর প্রবেশপথ আটকে দেয়।
আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত জি২০ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে প্যারিসে ফেরার পর পরই আর্ক দো ট্রিয়ফ পরিদর্শন করতে যান মাখোঁ। নাম না জানা এক সেনার সমাধির ওপর নির্মিত উনিশ শতকের আর্কটির সামনে ও সংলগ্ন সড়কে গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছে এবং বিলাসদ্রব্যের দোকানে ভাংচুর চালানো হয়েছে।
টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, আর্কটির অভ্যন্তরে লুণ্ঠন চালানো হয়েছে এবং ফ্রেঞ্চ রিপাবলিকের প্রতীক ম্যারিয়ানের মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়েছে। সেখানে পুঁজিবাদবিরোধী স্লোগান, মাখোঁর পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান লিখে রাখা হয়েছে।
বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত তিন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ২৩ সদস্যসহ আহত হয়েছেন আরো ১৩৩ জন। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে চারশরও বেশি বিক্ষোভকারী।