লাদাখের তিন এলাকা থেকে সেনা সরিয়েছে চীন
গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পূর্ব লাদাখের তিনটি এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার চীন তাদের সেনা সরিয়ে নিয়েছে বলে দাবি করেছে ভারত। কিন্তু দুই দেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (এলএএসি) অন্য কিছু অংশে এখনো টানাপড়েন চলছে। সামরিক এবং কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার শর্ত মেনে চীনা সেনারা সরলেও তাই পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে ভারত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, লাদাখের চুসুল সীমান্ত লাগোয়া মল্ডোতে গত ৩০ জুন কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পোনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানোর’ (ডিএসক্যালেশন) বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল।
ভারতীয় সেনা সূত্র জানায়, সেই আলোচনার ফলশ্রুতি হিসেবে গত ২ জুলাই থেকে সেনা কমানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর গত ৫ জুলাই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ই’র বৈঠকে লাদাখে পর্যায়ক্রমে লাদাখ সীমান্ত থেকে দুই দেশের সেনা সংখ্যা কমানো ও পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়।
গত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনা সেনারা যে জায়গায় সংঘর্ষ হয়, সেই পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৪ থেকে চীনা সেনাদের সরে যাওয়ার প্রমাণ উপগ্রহ চিত্রে পাওয়া গেছে। এর অদূরের পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৫ (হট স্প্রিং) এবং গোগরার পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৭এ থেকেও কিছুটা পেছনে সরেছে চীনা সেনারা।
ভারতী সেনার একটি সূত্র জানায়, ৩০ জুনের পরে ওই তিন এলাকা থেকে পাঁচটি ছাউনি সরিয়েছে চীনা সেনারা। কিন্তু তাদের বেশ কিছু নির্মাণ ও ছাউনি এখনো রয়েছে। ফলে পরিস্থিতির ওপর নজরদারি চালাচ্ছে ভারতীয় সেনারা। তবে আপাতত ওই তিন এলাকায় চীনা সেনারা নিয়ন্ত্রণে রেখারর ওপারে রয়েছে বলেই উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে।
গত মে মাসে এলএসি পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে গালওয়ান নদীর পাশ দিয়ে উপরে পাথর ভেঙে রাস্তা বানিয়েছিল চীন। নদীর ওপর বানানো হয় কালভার্ট।
এক ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘দ্রুত সামরিক যানবাহন যাতায়াতের উদ্দেশ্যে ওই চীনা ফৌজ রাস্তায় অ্যাসফল্টের প্রলেপ দিয়েছে। ওদের আনা কিছু ছাউনিও রয়ে গিয়েছে। সেগুলো থেকে গেলে বুঝতে হবে, পিছু হটা নয় বরং শীতের সময় পাকাপাকিভাবে ওখানে ঘাঁটি গেড়ে বসার মতলব রয়েছে ওদের।’
প্যাংগং লেকের উত্তরের ফিঙ্গার এরিয়া-৮-এর তিনটি পয়েন্ট থেকে চীন সেনা কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছে। কিন্তু ফিঙ্গার এরিয়া ৫ থেকে ৮ এখনো তাদের নিয়ন্ত্রণে। সেখানে বাঙ্কার, পিলবক্স, নজরদারি টাওয়ার বানিয়েছে তারা। অথচ মে মাসের আগে ওই এলাকাগুলোতে নিয়মিত টহল দিত ভারতীয় সেনা। এখন চীনা সেনাদের জন্য টহল দিতে পারছে না ভারতীয় সেনারা।