অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন রয়টার্সের সেই দুই সাংবাদিক

গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অবশেষে ইয়াঙ্গুনের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন মিয়ানমারে আটক হওয়া বার্তাসংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিক। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের অভিযোগে ৫০০ দিনের বেশি সময় কারাভোগের পর মুক্তি পেলেন তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা মঙ্গলবার তাদের কারাগারের বাইরে দেখেছেন বলে খবর দিয়েছে রয়টার্স।

মুক্তির পর মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ইয়াংগুনের একটি কারাগার বেরিয়ে আসেন সাংবাদিক ওয়া লোন (৩৩) এবং কিয়াও সোয়ে ও (২৯)। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাদের দু’জনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

তাদের দু’জনকে আটকের ঘটনায় মিয়ানমারে গণতন্ত্রের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং মানবাধিকার আইনজীবীরা। ওই দুই সাংবাদিককে গ্রেফতার এবং কারাদণ্ড দেয়ার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। তারপরেও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনঢ় থেকে তাদের মুক্তি দেয়নি মিয়ানমার।

গত মাসে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট নিজের ক্ষমতাবলে কয়েক হাজার বন্দীকে মুক্তি দেন। প্রতি বছরই দেশটি নববর্ষ উদযাপনকালে দেশব্যাপী বিপুল সংখ্যক বন্দিকে মুক্তি দিয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৭ এপ্রিল থেকে। এই প্রক্রিয়াতেই অন্যান্য বন্দীদের সঙ্গে মুক্তি পেলেন রয়টার্সের ওই দুই সাংবাদিক।

তবে বরাবরই রয়টার্সের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, ওই দুই সাংবাদিক কোন অপরাধ করেননি। তারা রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের সংবাদ সংগ্রহের জন্যই সেখানে গিয়েছিলেন। একই সঙ্গে বার বার তাদের মুক্তির দাবি জানানো হয়।

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে ২০১৭ সালের আগস্টে বেশ কয়েকটি পুলিশ ও সেনা চেক পোষ্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। অভিযানের নামে সেখানে রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ, নির্বিচারে গুলি করে রোহিঙ্গাদের হত্যা ও তাদের বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। এতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রামে ১০ জন রোহিঙ্গা পুরুষ ও কিশোরের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে অনুসন্ধান চালানোর সময় তাদের গ্রেফতার করা হয়। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে রাখাইনে ১০ রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে যান ওই দুই সাংবাদিক। তাদের মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন সাংবাদিক ওয়া লোন। মুক্তির পর ওয়া লোন বিবিসিকে বলেন, ‘আমি কখনোই সাংবাদিকতা ছাড়ব না।’

তিনি বলেন, আমি খুব খুশি। আমার পরিবার এবং সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। আমি নিউজরুমে যাওয়ার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছি না। হাত নেড়ে হাসিমুখে কথা বলেছেন অপর সাংবাদিক কিয়াও সোয়ে ও।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button