ব্যয় কমাতে নতুন প্রকল্পে লাগাম টানছে সরকার

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : আগামী অর্থবছরে নতুন প্রকল্পে লাগাম টানছে সরকার। ব্যয় কমানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে নতুন প্রকল্প অনুমোদনে এই রক্ষণশীলতার নীতি নেওয়া হয়েছে। তবে চলমান প্রকল্পগুলোর ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে যুক্ত করা হয়েছে ৩৩টি নতুন প্রকল্প। অনুমোদন হওয়া এসব প্রকল্প বরাদ্দসহ অর্ন্তভূক্ত হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) এমন নতুন প্রকল্প ছিল ৪৪টি। তুলানামূলক হিসাবে কমেছে ১১টি। তবে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দসহ অনুমোদিত নতুন প্রকল্প আছে ১৮২টি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক অস্থিরতার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশে। ফলে নিয়মিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক না হওয়ায় নতুন প্রকল্প কম হয়েছে। সেই সঙ্গে এডিপি তৈরির নীতিমালায়ও অর্থবরাদ্দে নতুন প্রকল্পে বরাদ্দ নিরুসাহিত করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে চলমান প্রকল্পে চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেয় পরিকল্পনা কমিশন।

জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ. মান্নান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, অনেকে ধারণা করেছিলেন নির্বাচন সামনে রেখে বাড়তি জনতুষ্টির কোন প্রকল্প এডিপিতে যুক্ত করা হবে। কিন্তু সেটি হয়নি। সরকার যেহেতেু গণতান্ত্রিক, তাই জনগণের কথা চিন্তা করেই সব কাজ করে। সেক্ষেত্রে সবসময়ই জনতুষ্টির বিষয়টি মাথায় থাকে। এখানে নির্বাচন বড় কথা নয়।

পরিকল্পনা কমিশনের এডিপির খসড়া বই পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আগামী অর্থবছরের যে ৩৩টি নতুন প্রকল্প যুক্ত করা হয়েছে এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প রয়েছে ২৩টি। এছাড়া সম্ভাব্য সমীক্ষা প্রকল্প রয়েছে দুটি, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের তিনটি এবং কারিগরি সহায়তা প্রকল্প রয়েছে পাঁচটি।

গত অর্থবছরের এডিপিতে ৪৪টি নতুন প্রকল্পের মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প ছিল ৩৮টি, কারিগরি সহায়তা প্রকল্প দুটি এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের প্রকল্প ছিল চারটি। এদিকে সংশোধিত এডিপি যে ১৮২টি নতুন প্রকল্প বরাদ্দসহ যুক্ত করা হয়েছে এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প আছে ১৫৬টি, কারিগরি সহায়তা প্রকল্প নয়টি এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের প্রকল্প আছে ১৭টি।

আগামী অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দসহ নতুন প্রকল্পগুলোর মধ্যে জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষা খাতের একটি, কৃষি খাতের তিনটি, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের চারটি এবং স্থাণীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতের প্রকল্প রয়েছে তিনটি। এছাড়া পরিবেশ-জলবায়ূ পরিবর্তন ও পানিসম্পদ খাতের পাঁচটি, গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলী খাতের ১০টি, ধর্ম-সংস্কৃতি ও বিনোদনের দুটি, শিক্ষার একটি, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবার একটি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের প্রকল্প রয়েছে তিনটি।

নতুন প্রকল্পের মধ্যে উলে­খযোগ্য কয়েকটি হলো-মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের পুর্নবাসন ও নদী তীর সংরক্ষণ, বাংলাদেশের ২৫টি শহরে অর্ন্তভূক্তিমূলক স্যানিটেশন প্রকল্প, পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণের সমীক্ষা প্রকল্প এবং দেশের প্রত্যেক জেলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে ন্যায়কুঞ্জ নামে বিচার প্রার্থী বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হবে।

এছাড়া কুমিল্লা বিভাগাধীন চারটি মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ, রেজিলিয়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর অ্যাডাপটেশন অ্যান্ড ভালনাবিলিটি রিডাকশন প্রকল্প এবং বান্দরবান পার্বত্য জেলার বোর্ড নির্মিত বিভিন্ন পল্লী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প।

আরও আছে, লেবুখালী-বাউফল-গলাচিপা-আমড়াগাছিয়া জেলা মহাসড়কের রাবনাবাদ নদীর উপর বারনাবাদ সেতু নির্মাণ, কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলা সদর হতে করিমগঞ্জ উপজেলার মরিচখালি পর্যন্ত উড়াল সড়ক নির্মাণ, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাসমুহের জন্য বেলারুশ থেকে মেশিনারীজ ও যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং কোস্টাল টাউন ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট।

 

সূত্র: সারাবাংলা

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button