১৫০ টাকায় নামল কাঁচা মরিচের কেজি

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : সাম্প্রতিক সময়ে কাঁচা মরিচের বাজারে যেন আগুন লেগেছিল। দেশের কোথাও কোথাও এক কেজি কাঁচা মরিচ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে সরকার আমদানির অনুমতি দেওয়ায় কাঁচা মরিচের দাম যে নিয়ন্ত্রণে আসবে, তার ইঙ্গিত মিলেছিল আগেই।
শেষ পর্যন্ত হলোও তাই। একদিকে দেশি কাঁচা মরিচের সরবরাহ আগের তুলনায় বেড়েছে। অন্যদিকে, ভারত থেকেও কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হয়েছে। ফলে বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কমতে শুরু করেছে।
ডেইলি স্টারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (৩ জুলাই) ঢাকার কারওয়ান বাজার এলাকায় কেজিপ্রতি দেশি মরিচ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে তবে ভারত থেকে আমদানি করা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। বিক্রেতাদের ভাষ্যমতে, ভারতের মরিচ বাংলাদেশের বাজারে আসায় দেশি মরিচের দাম কমে গেছে।
প্রসঙ্গত, ঈদের কয়েক দিন আগে থেকে দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বাড়তে থাকে। ঈদ-উল-আজহার পর তা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। রবিবার কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল ৩৫০-৪০০ টাকায়। শনিবার সেই দাম ছিল ৬০০ টাকা। দেশের কোনো কোনো এলাকায় তা ৭০০-৮০০ টাকা পর্যন্তও ছুঁয়েছিল।
পাইকারি মরিচ বিক্রেতা বকুল দেবনাথ বলেন, “দেশি মরিচের দাম আরও কমে আসতে পারে। সোমবার স্থানীয় বাজারে পাইকারি পর্যায়ে মরিচ কেনা হচ্ছে ১১০ টাকায়। অন্যান্য খরচ মিলে দাম পড়বে ১২০-১৩০ টাকা। বাজারে ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হবে।”
মরিচ ব্যবসায়ী সোলায়মান বলেন, “সোমবার কাঁচা মরিচ ১৫০ টাকা করে কেজি বিক্রি করছি। এক হাজার কেজি এনেছিলাম। এখন ২০ কেজির মতো আছে। গতকাল ৫০০ কেজি বিক্রি হয়েছিল। দাম কমে যাওয়ায় বিক্রিও বেড়েছে।”
আরেক মরিচ বিক্রেতা মো. বাছেদ বলেন, “ভারতের মরিচের দাম একটু বেশিই থাকবে। কারণ ভারতের মরিচের চাহিদা একটু বেশি। তাছাড়া, এই মরিচের ঝাল একটু বেশি।”
এদিকে, দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকায় গত ২৫ জুন এ নিত্যপণ্য আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। তখন দেশে কাঁচা মরিচের দাম ছিল ২৫০ টাকা কেজি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর ২৮ হাজার ৪১০ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ঈদের আগে ২৬ জুন পর্যন্ত সোনামসজিদ ও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৩৮ হাজার ৬৭১ কেজি কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে। ঈদ-উল-আজহার ছুটি শেষে রবিবার থেকে আবারও ভারতীয় কাঁচা মরিচ দেশে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। রবিবার সকালে কাঁচা মরিচভর্তি ছয়টি ভারতীয় ট্রাক সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করে। প্রতিটি ট্রাকে ১০ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ রয়েছে।
গত ২৬ জুন হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ২৭ মেট্রিক টনের মতো কাঁচা মরিচ আমদানি হয়। এ স্থলবন্দর দিয়ে সোমবার ২৫ থেকে ৩০ ট্রাক কাঁচা মরিচ আমদানি হতে পারে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে রোববার চারটি ট্রাকে করে ভারত থেকে ৪০ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে। শুল্কায়ন ও আনুষঙ্গিক খরচ মিলে কেজিতে কাঁচা মরিচের আমদানি মূল্য পড়েছে প্রায় ৫৬ টাকা।