জঙ্গি হামলার শঙ্কায় সতর্ক পুলিশ

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : আসন্ন ঈদুল ফিতরের ছুটি উপলক্ষে রাজধানীর পথে-ঘাটে ও বাসাবাড়িতে ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতি ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জঙ্গি হামলার শঙ্কায় ৩০ মে থেকে ঈদের ছুটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশে পুলিশ সদস্যদের বিশেষ সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশ ও র‌্যাবের একাধিক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানান।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, ঈদ উপলক্ষে ফাঁকা রাজধানীর অপরাধ প্রতিরোধে মহল্লাকেন্দ্রিক নিরাপত্তাব্যবস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালনে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পথে-ঘাটের ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে টহল পুলিশের পাশাপাশি পুলিশের ইন্টেলিজেন্স দলের সদস্যরা কাজ করবেন। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

ডিএমপির ক্রাইম (অপারেশন) বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, সাদাপোশাকের গোয়েন্দা সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন। রাজধানীর আটটি জোনের অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে টহল পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নিছিদ্র নিরাপত্তার জন্য রাজধানীজুড়ে প্রায় ১২ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবেন। এর বাইরে র‌্যাবের পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি বলেন, রাজধানীতে ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় থানা-পুলিশ ছাড়াও গোয়েন্দাদের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ঈদের নামাজের আগেই ডগ স্কোয়াড (কে-৯ ইউনিট) ও বোম্ব-ডিসপোজাল ইউনিট দিয়ে জাতীয় ঈদগাহে সুইপিং করা হবে। থাকবে মেটাল ডিটেকটর ও আর্চওয়ে। জমায়েতের স্থান ও আশপাশে স্থাপন করা হবে সিসিটিভি ক্যামেরা।

পুলিশ সদর দপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে কিশোর অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের নজরদারির জন্য স্থানীয় পুলিশের পাশাপাশি মহল্লাকেন্দ্রিক নিরাপত্তাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পুলিশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ঈদের ছুটিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলার শঙ্কার কথা জানানো হয়েছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

ডিএমপির জনসংযোগ শাখার একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ঈদে ছুটির সময় ফাঁকা রাজধানীর বিভিন্ন বাসায় চুরি প্রতিরোধে নগরবাসীকে ১৮ নির্দেশনা পালনের অনুরোধ করা হয়েছে। শহরের বাসা ছেড়ে গ্রামমুখী হওয়ার আগে বাড়িতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ব্যবহার, মেইন গেটে অটোলক লাগানো, দরজা-জানালা তালাবদ্ধকরণসহ বাড়ির নিচতলায় বসবাসকারীদের ভেন্টিলেশনের জানালাও বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।

ডিএমপির মুখপাত্র মাসুদুর রহমান বলেন, বাসার চারপাশে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাসহ দরজায় নিরাপত্তা অ্যালার্মযুক্ত তালা, মূল্যবান সামগ্রী ও দলিল নিরাপদ হেফাজতে রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্ঘটনা প্রতিরোধে রুমের লাইট, ফ্যানসহ অন্যান্য ইলেকট্রিক লাইনের সুইচ, পানির ট্যাপ ও গ্যাসের চুলা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। মহল্লা ও বাড়ির সামনে সন্দেহজনক কাউকে বা দুষ্কৃৃতকারীকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ঘরমুখী মানুষসহ নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাস, লঞ্চ, মহাসড়ক ও রেলস্টেশনগুলোতে ১৫টি অস্থায়ী ক্যাম্পের মাধ্যমে ঘরমুখী যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।

 

সূত্র: দেশ রূপান্তর

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button