কালীগঞ্জে বিএনপি নেতার ‘হুকুমে’ যুগান্তরের সাংবাদিককে মারধর ও লুটপাট, ৯ জনের নামে মামলা

নিজস্ব সংবাদদাতা : কালীগঞ্জে বিএনপি নেতার হুকুমে যুগান্তর পত্রিকার কালীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক আব্দুল গাফফারকে মারধর করে নগদ অর্থ, মোবাইল, ল্যাপটপ ও ক্যামেরা লুটের ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তরা সকলে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থক।
সোমবার (১৭ মার্চ) রাতে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক কালীগঞ্জের জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের কাউলিতা এলাকার মো. ওয়াসিন শিকদারের ছেলে আব্দুল গাফফার (৪৫)। তিনি যুগান্তর পত্রিকার কালীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি।
আসামিরা হলো, জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের কাউলিতা এলাকার মৃদ কাদির আকন্দের ছেলে আলমগীর হোসেন ওরফে বগা আলমগীর (৪৭), সিরাজ উদ্দিন সেরুর ছেলে শাহেদ আলী আকন্দ (৩৫) ও হৃদয় আকন্দ (২৫), ফালু আকন্দ (২৬), মোমেন আকন্দের ছেলে মারুফ (২৫), ফজলুল হক আকন্দ ওরফে তারকাঁটা ফজলু (৬০), সিরাজ উদ্দিন সেরু (৫৬), কালীগঞ্জ পৌরসভার মুনশেফপুরের মৃত কবুলের ছেলে রুবেল (২২) এবং কুলথুন এলাকার বিল্লাল খানের ছেলে ফয়সাল (৩৭)।
আসামিদের মধ্যে হুকুমদাতা ফজলুল হক আকন্দ ওরফে তারকাঁটা ফজলু কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক, প্রধান আসামি আলমগীর হোসেন জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবং সিরাজ উদ্দিন সেরু ওয়ার্ড বিএনপি নেতা।
অন্যরা সকলেই বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থক।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা মাদক, চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। এর আগে তাদের অপকর্ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় তারা সাংবাদিক গাফফারের প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলো। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন তৈরির জন্য তথ্য সংগ্রহ করছিলো সাংবাদিক গাফফার। বিষয়টি বুঝতে পেরে অভিযুক্তরা তাকে হুমকি দিতে থাকে। গত ১৬ মার্চ (রোববার) রাত ৯টার দিকে সাংবাদিক আব্দুল গাফফার আনন্দ টিভির সাংবাদিক খোরশেদ আলম খানের মোটরসাইকেলে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে আওড়াখালি বাজার চৌরাস্তার কাছে গোবিন্দ রেস্টুরেন্টের সামনে পৌঁছালে অভিযুক্তরা মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। পরে ধাক্কা দিয়ে গাফফারকে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেওয়া হয়। সে সময় ফজলুল হক আকন্দের হুকুমে অন্যরা তাকে মারধর করতে থাকে। সে সময় তারা গাফফারের সঙ্গে থাকা গরু কেনার নগদ ২ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা, দুটি মোবাইল, একটি ল্যাপটপ ও একটি ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় সাংবাদিক আব্দুল গাফফার বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নম্বর ২০(৩)২৫)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিগ্যান মোল্লা বলেন, ঘটনায় পর রাতেই অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত ফয়সালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সোমবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।