বেসরকারি স্কুলে ভর্তি ফি বেঁধে দিতে পারবে সরকার?

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : নবনিযুক্ত শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি মনে করছেন, সরকারি স্কুলের মতো বেসরকারি স্কুলেও সুনির্দিষ্টভাবে ভর্তি ফি বেঁধে দেয়া উচিত।

স্কুলে ভর্তির মৌসুমে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকার নির্ধারিত ভর্তি ফি’র বাইরে ‘গলাকাটা’ অর্থ অভিভাবকদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে, এই অভিযোগের পটভূমিতে শিক্ষামন্ত্রী শুক্রবার এই মন্তব্য করেন।

“সরকারের নিয়ন্ত্রণে যেটুকু থাকবে, তাতে নিয়ম মানা হবে। কিন্তু বেসরকারি হলেই সেটি একেবারেই লাগামছাড়া, সেটি একেবারেই হওয়া উচিত নয়,” এক সাক্ষাৎকারে দীপু মনি বলেন,”সে ক্ষেত্রেও একটা যুক্তিসঙ্গত সিলিং নিশ্চয়ই থাকা উচিত।”

অভিভাবকদের উদ্ধৃত করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খবর, বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নের নামে করে ঢাকার নামীদামী স্কুলগুলোতে অভিভাবকদের কাছ থেকে গড়ে মাথাপিছু অতিরিক্ত ৫,০০০ থেকে ৩৫,০০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।

কিন্তু এব্যাপারে স্কুলগুলোর বক্তব্য হচ্ছে, ব্যয় বেড়েছে। তাই বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত অর্থ নিতে হচ্ছে।

স্কুল কমিটিগুলো এই বাড়তি অর্থ আদায় অনুমোদন করেছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে।

কিন্তু এ ধরনের অর্থ আদায়ের বিরুদ্ধে সতর্ক করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, “যদি কোন স্কুল এই অতিরিক্ত ফি নিয়ে থাকে তাহলে সাক্ষ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে সেই স্কুলের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”

“কোন স্কুলই এই ধরনের অনৈতিক এবং বেআইনি কাজ করবে না বলে আমি আশা করবো।”

bartabahok
স্কুলে ভর্তি পরীক্ষার সময় অভিভাবকদের চরম অনিশ্চয়তায় ভুগতে হয়।

তিনি বলেন, “আমি অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ করবো যদি কোন স্কুল এধরনের অতিরিক্ত ফি আদায় করবার চেষ্টা করে, তাহলে তারা যেন আমাদের কাছে সেই তথ্য-প্রমাণ দেন যেন আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি। আমরা নিজেরাও তথ্য সংগ্রহ করছি যে কোথাও এধরনের কিছু হচ্ছে কিনা। হলে অ।বশ্যই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”

স্কুলগুলিতে ভর্তির ওপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় সর্বশেষ যে নীতিমালা তৈরি করেছে তাতে বলা হয়েছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে ৫,০০০ টাকার অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে পারবে না।

ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আংশিক এমপিওভুক্ত স্কুলগুলো উন্নয়ন এবং এমপিও বহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য শিক্ষার্থী ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফি’সহ বাংলা মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৮,০০০ টাকা এবং ইংরেজি মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা গ্রহণ করতে পারবে।

উন্নয়ন খাতে কোন প্রতিষ্ঠান ৩,০০০ টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে নতুন সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা উল্লেখ করে ডা. দীপ মনি বলেন, স্কুলগুলোর জন্য যে সিলিং নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অনেক বিচার-বিবেচনা করেই ঠিক করা হয়েছে।

সেটি পুনর্বিবেচনা করার প্রয়োজন হলে তা নিয়ে নিশ্চয়ই আলোচনা করা যেতে পারে।

কিন্তু তার আগে এখন পর্যন্ত যে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে, স্কুলগুলিতে তাই মেনে চলতে হবে বলে তিনি বলেন।

দেশে বেসরকারি স্কুলগুলিতে গত নভেম্বর মাস থেকে শুরু হয়েছে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রক্রিয়া।

অনেক স্কুলেই লটারি এবং ভর্তি পরীক্ষার পর্ব সম্পন্ন হয়েছে।

 

সূত্র:বিবিসি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button