ত্রাণ চেয়েও পাননি; সুফিয়ার বাচ্চার দুধ কিনে দিলেন রিকশাওয়ালা: উদীচীকর্মীর ভিডিও ভাইরাল

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : নাম তার সুফিয়া। থাকেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫১ নং ওয়ার্ডে। তিনটি সন্তান তার। বাসাবাড়িতে কাজ করে দিন চলে। করোনাভাইরাসের কারণে চলতি লকডাউনে তার আয় বন্ধ হয়ে গেছে। তিন সন্তান নিয়ে তার ভরসা এখন সরকারি-বেসরকারি সাহায্য। কিন্তু সেখানেও বিপদ। অন্য জেলার ভোটার হওয়ায় তাকে সরকারি ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে না! টংগীর উদীচীকর্মী মাধব আচার্যের ধারণ করা এক ভিডিওতে এই করুণ কাহিনী প্রকাশ্যে এসেছে।

ত্রাণ নিতে এসে অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে সুফিয়া বলেন, ‘আজকে কিছুই দেয় নাই। তারা বলতেছে, এইখানে যারা স্থানীয় ভোটার তারা পাইব। আমি তো স্থানীয় না, আমি সিলেটের ভোটার। আমি গিয়া কমিশনাররে কইলাম, সেও এই কথা কইল। তুমি তো পাবা না। সরকারে বলে কইছে, এই জায়গার ভোটার যারা তারা পাইব লিস্ট কইরে কইরে। আর এই জায়গার যারা ভোটার না, তারা পাইব না।’

তিন সন্তানের জননীর ছোট সন্তানটির বয়স মাত্র ৪ মাস। তার দুধের প্রয়োজন হয়। কিন্তু দুধ কেনার টাকা কোথায় পাবেন তিনি? সুফিয়া বলেন, ‘বাচ্চা বুকের দুধও খায় তোলা দুধও খায়। বুকের দুধ তো পায় না…। তোলা দুধের উপরেই চলতেছে। তোলা দুধ কই পামু? ঘরে তো খাবার নাই, তোলা দুধ ক্যামনে কিনমু? একটা রিকশা ড্রাইভারে এই দুধটা দিল। আর একজনে হাফ কেজি চিনি দিল বাচ্চার লাইগা। কি করমু তাইলে আমি…’

টঙ্গিতে জনৈক শুক্কুর আলী সাহেবের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন সুফিয়া। গাড়ি বন্ধ থাকায় নিজের জেলাতেও যেতে পারছেন না। আজ নিজেসহ বাকি দুই বাচ্চার খাওয়ার জন্যও কেউ একজন তাকে সহায়তা করেছেন। জিনিসগুলো দেখিয়ে দেখিয়ে সুফিয়া বলছিলেন, ‘আমাগো খাওয়ার জন্য এই কয়টা ডাটা, কয়টা মাছ আর হাফ কেজি চাইল দিল। আর কয়ডা আলু দিছে। মাছগুলা ভালোই দিছে….।’ সুফিয়ার চোখে দেখা যায় পরিতৃপ্তির ছাপ। আজকের ব্যবস্থা তো হলো। কিন্তু কাল কী হবে?

 

টংগীর উদীচীকর্মী মাধব আচার্যের ধারণ করা ভিডিও

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button