টঙ্গীতে করোনা সন্দেহে হাসপাতালে ঢুকতে দেওয়া হলো না অসুস্থ বাসস’র সাংবাদিককে

শেখ আজিজুল হক, টঙ্গী থেকে : করোনা ভাইরাসের রোগী সন্দেহে অসুস্থ একজন মুক্তিযোদ্ধা ও বাসস’র সাংবাদিককে হাসপাতালেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি। করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট দেখানোর পরও তিনি কোনো ধরণের সহানুভূতি ও চিকিৎসা সেবা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।

টঙ্গী স্টেশন রোডের আবেদা জেনারেল (প্রা:) হাসপাতালে বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে এ ঘটনা ঘটেছে।

ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিককের নাম শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাবের বর্তমান সভাপতি।

তাঁর বাড়ি টঙ্গী রেলওয়ে জংশনের উত্তর পাশে স্থানীয় নতুন বাজার এলাকায়।

ভুক্তভোগী শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর স্ত্রী গাজীপুর মহানগর মহিলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি শিরিন শহীদ জানান, তার স্বামী শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ গত কয়েক দিন ধরে সামান্য জ্বর ও মাথা ব্যথায় ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার তাকে টঙ্গী গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে পরীক্ষায় তার করোনা নেগেটিভ আসে। পরে তার প্রশ্রাব পরীক্ষায় ইনফেকশন ধরা পড়ে। গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাপত্র নিয়ে তাকে বাসায় নেয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় হঠাৎ তার জ্বর ও মাথা ব্যথা বেড়ে গেলে তাকে প্রথমে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কোনো ডাক্তার না পেয়ে তাকে পাশেই আবেদা জেনারেল (প্রাইভেট) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর তার জ্বরের কথা শুনে হাসপাতালের গেটই খুলা হয়নি। এসময় তার সাথে থাকা করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট দেখিয়ে বহু অনুরোধ করার পরও কোনো ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মী তার কাছেই যাননি।

শিরিন শহীদ বলেন, আমার স্বামীর অন্তত প্রেসারটা (রক্তচাপ) মেপে দেখার জন্য তাদেরকে বহু অনুরোধ করেছি। কিন্তু তাদের একটুকুও মায়া হয়নি। কোনো ধরণের সহযোগিতা ও সহানুভূতি দেখায়নি। প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে অবশেষে বাধ্য হয়ে তাকে বাসায় ফেরত নেওয়া হয়।

শুক্রবার সকালে তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে এদিন বন্ধের অজুহাতে তাকে পরের দিন (শনিবার) যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। এর পর তাকে উত্তরায় কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেওয়া হলে করোনা পজেটিভ না থাকায় তাকে সেখান থেকেও ফেরত দেওয়া হয় এবং সাথে থাকা ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী বাসায় চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং তার জ্বর ও মাথা ব্যথা রয়েছে বলে শিরিন শহীদ জানান।

এদিকে রাতে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় যোগাযোগ করা হলে আবেদনা প্রাইভেট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. ইফতেখার আহমেদ বলেন, আমার হাসপাতালে এমন হওয়ার কথা নয়; আমি সকলকে পিপিই-সহ সকল ধরণের সুরক্ষামূলক উপকরণ দিয়েছি। কেন এমন হলো আমি খবর নিচ্ছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button