রডের বদলে বাঁশ, ৩ বছরেই ভেঙে গেল ওয়াস ব্লক

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : বরগুনার আমতলী উপজেলার বৈঠাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াস ব্লক নির্মাণে লেনটিনে রডের পরিবর্তে বাঁশের কঞ্চি (টুনি) ব্যবহার করা হয়েছে। করোনায় বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। শনিবার সকালে ওই ওয়াস ব্লকের মেরামত কাজ শুরু করেতে গিয়ে লেনটিন ও ওয়াল ভেঙে পড়ে। এ সময় দেখা যায় লেনটিনের মধ্যে রডের পরিবর্তে বাঁশের কঞ্চি (টুনি) ব্যবহার করা হয়েছে।

রডের পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে ওয়াস ব্লক নির্মাণকারী ঠিকাদার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক নুরজামালকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, আমতলী উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে বৈঠাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াস ব্লক নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। ৭ (সাত) লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই কাজটি পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার মো. দেলোয়ার হোসেন নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দরপত্র দাখিল করেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ঠিকাদার নুরজামাল। ওয়াস ব্লক নির্মাণের শুরুতেই তিনি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ শুরু করলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এতে বাঁধা প্রদান করে। কিন্তু সেই বাঁধা উপেক্ষা করে প্রভাব খাটিয়ে ঠিকাদার নুরজামাল কাজ সম্পন্ন করেন। তখন নুরজামালের ভয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাজ দেখভাল পর্যন্ত করতে পারেনি। তৎকালীন উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিমের সাথে আঁতাত করে তিনি নিজের ইচ্ছা মতো রডের পরিবর্তে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ওয়াস ব্লক নির্মাণ করেছেন। ২০১৭ সালে ওই কাজ শেষ হয়।

রবিবার বিকেলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মজিবুর রহমান ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. তরিকুল ইসলাম বিদ্যালয় ভাঙা ওয়াস ব্লক পরিদর্শন করেন। খবর পেয়ে ঠিকাদার নুরজামাল গিয়ে ভাঙা ওয়াস ব্লক থেকে লেনটিনে ব্যবহার করা বাঁশের কঞ্চি সরিয়ে ফেলেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এ সময় স্থানীয়দের তোপের মুখে সেখান থেকে সটকে পড়েন।

এ বিষয়ে ঠিকাদার নুরজামাল রডের পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে ওয়াস ব্লক নির্মাণের কথা অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। জানতে চাওয়া হয় কাজ তো আপনি করেছেন তাহলে রডের পরিবর্তে বাঁশ আসলো কোথা থেকে। এর কোনো উত্তর তিনি দিতে পারেননি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মজিবুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঠিকাদার রডের পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে ওয়াস ব্লক নির্মাণ করেছেন।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, নির্মাণের সময় আমি এখানে দায়িত্বে ছিলাম না। খবর পেয়ে আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ওয়াস ব্লক নির্মাণের কথা শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button