কাশিমপুর কারাগারে কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতেই ‘নারী নিয়ে সময় কাটান’ হলমার্কের তুষার!
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কারা কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতেই জেলের ভেতরে স্বাচ্ছন্দ চলাফেরা, বাইরে থেকে নারীকে এনে খুনসুটি, একান্তে সময় কাটানো। কাশিমপুর কারাগার-১ এমন আমুদে জীবনে আছেন কয়েদি হলমার্কের তুষার। সিনিয়র জেল সুপারের উপস্থিতিতেই এতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করছেন ডেপুটি জেলার। যার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এ দৃশ্য ধরা পড়েছে। পুরো ঘটনায় তোলপাড় চলছে, কারা অধিদপ্তরে। গঠিত হয়েছে, দুটি তদন্ত কমিটি।
জেলখানার সম্বল, থালা বাটি কম্বল। হালে অবশ্য এমন প্রবাদ ধোপে টেকে না। অন্তত কাশিমপুর কারাগারেতো নয়ই। কেন? সেই প্রশ্নের উত্তর মিলবে একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে।
দেশের আর্থিক খাতের অন্যতম কেলেংকারি হলমার্ক আর তার হোতা তানভীর। কয়েক হাজার কোটি টাকা লোপাটের সেই কেলেংকারিতে তানভীরের অন্যতম সহযোগী তুষার। হলমার্ক গ্রুপের জিএম সম্পর্কে তানভীরের ভায়রা।
গ্রেপ্তার হয়ে তুষার এখন কাশিমপুর কারাগারে অন্তরীণ। কিন্তু গত ৬ জানুয়ারি কারাগারের প্রধান ফটকের ভেতরের সিটিটিভি ক্যামেরায় দেখা গেলো ভিন্ন তুষারকে। হাঁটাচলার ধরন আর মুখাবয়বে কে বলবে তিনি কয়েদি। ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে ঢোকেন প্রধান ফটকের বাম পাশের একটি কক্ষে।
আট মিনিট পেছনে যাওয়া যাক। ১২টা ৫৬ মিনিট, কারাগারে দুই যুবকের সাথে ঢুকলো এক নারী। রিসিভ করেন খোদ ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। ঢোকেন পাশের কক্ষে। বেরিয়ে যান সাকলায়েন। আট মিনিট পর ফেরেন তুষারকে নিয়ে।
প্রায় ১০ মিনিট পর অফিস ছাড়েন, বেরিয়ে যান সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায়। মিনিট না পেরুতেই রত্না রায়ের কক্ষের দিকে যান তুষার। দুই মিনিট পর বেরিয়ে এসে, এবার ফের সেদিকে যান। তবে এবার সাথে সেই নারী। যাতায়াতের সময় খানিক খুনসুটিও করেন দুজনায়। হাসি ঠাট্টায় বোঝার জো নেই, কয়েদি না ভ্রমনপিপাসু।
দুই মিনিট পর আবারো দুজন ফেরেন আগের কক্ষেই। এরপর ছিলেন টানা ৪৫ মিনিট। ভেতরকার ছবি অবশ্য ধরা পড়েনি ক্যামেরায়।
করোনাকালে যেখানে পরিদর্শন নিষেধ সেখানে ডেপুটি জেলার, সিনিয়র জেলা সুপারের উপস্থিতিতে এক কয়েদির নারী নিয়ে জেলের ভেতরেই সময় কাটানো নিয়ে এখন তোলপাড় কারা অধিদপ্তর। গঠিত হয় দুটি তদন্ত কমিটি।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস. এম. তরিকুল ইসলাম বলছেন, অভিযোগটি তদন্ত করে এরই মধ্যে সত্যতা পেয়েছেন তারা। তবে সারাক্ষণ পাহারায় থাকায় ডেপুটি জেল সুপার সাকলায়েনের দাবি, সবই হয়েছে সুপারের নির্দেশনায়।
অনেক চেষ্টাতেও মেলেনি সুপারের মন্তব্য। মুখে কুলুপ এঁটেছেন কারা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও। তদন্ত চালিয়ে গেলেও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে নারাজ।
https://youtu.be/M2-WQe42970