কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা থেকে যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৩টি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান করে সরকার গঠন করে। ৭ এপ্রিল সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়।
প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
১৯৭৩ সালের ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন ঢাকা-২৩ আসন (কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন (সদস্য নং ১৯১)।
সংসদ নেতা নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান/মোহাম্মদ মনসুর আলী।
এ সংসদের মেয়াদ ছিল দুই বছর ছয় মাস (৭ এপ্রিল ১৯৭৩ – ৬ নভেম্বর ১৯৭৫)।
দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন
১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ২০৭টি আসন পেয়ে জয়লাভ করে।
ওই নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন ঢাকা-২৩ আসন (কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান জিতু মিয়া (সদস্য নং ১৯৬)।
সংসদ নেতা নির্বাচিত হন শাহ আজিজুর রহমান। বিরোধীদলীয় নেতা হন আসাদুজ্জামান খান।
এ সংসদের মেয়াদ ছিল তিন বছর (২ এপ্রিল ১৯৭৯ – ২০ মার্চ ১৯৮২)।
তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন
১৯৮৬ সালের ৭ মে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ১৫৩টি আসন পেয়ে জয়লাভ করে।
ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন গাজীপুর-৩ আসন (কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন মোহাম্মদ হাসি উদ্দিন দেওয়ান (সদস্য নং ১৯৫)।
সংসদ নেতা নির্বাচিত হন মিজানুর রহমান চৌধুরী। বিরোধীদলীয় নেতা হন শেখ হাসিনা।
এ সংসদের মেয়াদ ছিল ১৭ মাস (১০ জুলাই ১৯৮৬ – ৬ ডিসেম্বর ১৯৮৭)।
চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচন অধিকাংশ রাজনৈতিক দল বর্জন করে। ফলে জাতীয় পার্টি ২৫১টি আসন পেয়ে জয়লাভ করে।
ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন গাজীপুর-৩ আসন (কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা) থেকে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান জিতু মিয়া (সদস্য নং ১৯৫)।
সংসদ নেতা নির্বাচিত হন ব্যরিস্টার মওদুদ আহমেদ/কাজী জাফর আহমেদ। বিরোধীদলীয় নেতা হন আ স ম আব্দুর রব।
এ সংসদের মেয়াদ ছিল দুই বছর সাত মাস।
পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। এ নির্বাচনে বিএনপি ১৪০টি আসন পেয়ে জয়লাভ করে।
ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন গাজীপুর-৩ আসন (কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ডা. আফসার হোসেন মোল্লা (সদস্য নং ১৯৫)।
সংসদ নেতা নির্বাচিত হন বেগম খালেদা জিয়া। বিরোধীদলীয় নেতা হন শেখ হাসিনা।
সংসদের মেয়াদ চার বছর আট মাস।
ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নির্বাচনটি বর্জন করায় বিএনপি ২৭৮টি আসন পেয়ে একতরফা জয়লাভ করে।
ওই নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন গাজীপুর-৩ আসন (কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এ কে এম ফজলুল হক মিলন (সদস্য নং ১৯৫)।
সংসদ নেতা হন বেগম খালেদা জিয়া। এ সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১২ দিন (১৯ শে মার্চ ১৯৯৬ – ৩০ শে মার্চ ১৯৯৬)।
সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৪৬টি আসনে জয়লাভ করে। এটি ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন গাজীপুর-৩ আসন (কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন আখতারউজ্জামান (সদস্য নং ১৯৫)।
সংসদ নেতা নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। বিরোধীদলীয় নেতা হন বেগম খালেদা জিয়া।
সংসদের মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ছিলেন লতিফুর রহমান। নির্বাচনে বিএনপি ১৯৩টি আসন পেয়ে জয়লাভ করে।
ওই নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন গাজীপুর-৩ আসন (কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এ কে এম ফজলুল হক মিলন (সদস্য নং ১৯৫)।
সংসদ নেতা নির্বাচিত হন বেগম খালেদা জিয়া। বিরোধীদলীয় নেতা হন শেখ হাসিনা।
সংসদের মেয়াদ হয় পাঁচ বছর (পূর্ণমেয়াদ)।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দিন আহমদের অধীনে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩০টি আসন পেয়ে জয়লাভ করে।
ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে গাজীপুর-৫ আসন (কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন মেহের আফরোজ চুমকি (সদস্য নং ১৯৮)।
সংসদ নেতা নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। বিরোধী দলীয় নেতা হন বেগম খালেদা জিয়া।
সংসদের মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর (পূর্ণমেয়াদ)।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে মোট ১৪৭টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়। মোট ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন আওয়ামী লীগসহ এর শরিকরা।
ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে গাজীপুর-৫ আসন (কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা) থেকে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন মেহের আফরোজ চুমকি (সদস্য নং ১৯৮)।
সংসদ নেতা নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। বিরোধী দলের নেতা হন রওশন এরশাদ।
সংসদের মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর (পূর্ণমেয়াদ)।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে মোট ২৯৯ টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়। মোট ২৬৬ টি আসনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগ।
ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে গাজীপুর-৫ আসন (কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা) থেকে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মেহের আফরোজ চুমকি (সদস্য নং ১৯৮)।
সংসদ নেতা নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। বিরোধী দলের নেতা হন রওশন এরশাদ।
সংসদের মেয়াদ চলমান।
আরো জানতে…….
তৎকালীন ‘কালীগঞ্জ হাই ইংলিশ স্কুল’ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস
বস্ত্র শিল্পের এক ঐতিহ্যবাহী শিল্প প্রতিষ্ঠানের নাম ‘মসলিন কটন মিল’