ডিএনসিসির নগর ভবনেই নেই অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : চুড়িহাট্টা, বনানীসহ রাজধানীতে কয়েকটি বড় অগ্নিদুর্ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে দুই সিটি করপোরেশন, রাজউক এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগ। নির্মাণের সময় অগ্নিঝুঁকিসহ বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা থাকলেও অনেক ভবনই নিয়ম লঙ্ঘন করে তৈরির প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। খোদ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নগর ভবনেই নেই অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলার ব্যবস্থা।

গুলশান-২ নম্বরে অবস্থিত ডিএনসিসির নগর ভবনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি মোকাবিলার ব্যবস্থা নেই। বহুতল এই ভবন থেকে ডিএনসিসির কর্মীদের নামার জন্য বহির্গমন সিঁড়ি একটি। সেটিও পাশাপাশি দুজনের ওঠা-নামার উপযুক্ত নয়। জরুরি পরিস্থিতিতে নামার জন্য কোনো ব্যবস্থা এই ভবনে নেই। আগুন লাগলে কর্মীদের সতর্ক করার ফায়ার অ্যালার্ম নেই। কার্যালয়ের প্রতিটি কক্ষে বিভাজক হিসেবে ব্যবহৃত দেয়ালগুলোও বোর্ডের তৈরি। প্রতি কক্ষের ভেতর ফলস ছাদ। জরুরি পরিস্থিতিতে কোন দিকে যেতে হবে, এ রকম কোনো নির্দেশনাও নেই ভবনে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডিএনসিসি ভবনে অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। যা সত্য, তা লুকানোর উপায় নেই। এই ভবনের নির্মাতা কমপ্লায়েন্সের ব্যবস্থা করেনি। সিটি করপোরেশন এ নিয়ে চিন্তিত। তবে এই ভবনে যত শিগগির সম্ভব অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে আমি নির্দেশ দিয়েছি।’

গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছিলেন, শিগগিরই ডিএনসিসির আওতাধীন প্রতিটি ভবনে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ও জরুরি নির্গমন পথ ঠিক আছে কি না, তা দেখতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

ডিএনসিসি সূত্র জানায়, আগুন লাগার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় মেয়রের নির্দেশে জরুরি নির্গমন সিঁড়ি, আগুনের সতর্কসংকেত, কর্মীদের নিরাপত্তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে গতকাল বুধবার বৈঠক করেছে ডিএনসিসি।

ভবনের অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেনটেন্যান্স) এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, ‘ভবন তৈরির সময়ই সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক করা দরকার। ডিএনসিসিকে আগেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের ভবনটি তুলনামূলক নতুন হওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি পূরণ করেনি। তাদেরও আমরা সতর্ক করেছি। আর ডিএসসিসিতে তাদের নিজস্ব ব্যবস্থা আছে।’

এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলেও সরঞ্জামগুলো কার্যকর আছে কি না, তা বলতে পারছেন না কর্মকর্তারা।

নব্বইয়ের দশকে তৈরি সুদৃশ্য নগর ভবনের চারপাশ খোলামেলা। এর প্রতিটি তলাও যথেষ্ট খোলামেলা। ভবনের অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিউল্লাহ বলে, ‘ডিএসসিসির অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে, তবে তা অপ্রতুল। ব্যবহার না হওয়ায় এখানকার ফায়ার এক্সটিংগুইশার ও হোসপাইপগুলো কার্যকর কি না, বলা যাচ্ছে না।’

 

সূত্র: প্রথম আলো

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button