শুধু পঞ্চম শ্রেণি, এসএসসি ও এইচএসসি’র ক্লাস প্রতিদিন, অন্যান্যদের সপ্তাহে একদিন

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : প্রায় ১৭ মাস বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে।

রোববার (০৫ সেপ্টেম্বর) আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেন। আর এজন্য ৩৭টি গাইডলাইনও দেয়া হয়েছে।

পঞ্চম শ্রেণি, এসএসসি ও এইচএসসির সব দিনই ক্লাস হবে। তবে অন্যান্য শ্রেণির ক্লাস হবে সপ্তাহে একদিন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এইসব ক্লাস হবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ ১২ বছরের বেশি যাদের বয়স তাদেরও যেন টিকা দোয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়। আর এখন যাদের ১৮ বছরের বেশি বয়স সেই সব শিক্ষার্থী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পাবে।”

এদিকে নভেম্বরে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা আগেই দেয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, পিইসি, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা নেয়ারও প্রস্তুতি আছে। আর সব কিছু ঠিক থাকলে সব ক্লাসের বার্ষিক পরীক্ষাও নেয়ার আশা আছে।

আগামী ৯ অক্টোবরের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকার ও পরামর্শক কমিটির গাইডলাইন মেনে খোলার জন্য প্রস্তুত করতে হবে। মাস্ক বাধ্যতমূলক৷ মাস্ক ছাড়া কেউ ক্লাসে যেতে পারবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘‘বছরের পর পর বছর তো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা যাবে না। তাই সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সঠিক। কিন্তু সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে পুরোপুরি।”

তার মতে, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষক, ছাত্র, কর্মাচারী সবাইকে টিকা দিতে হবে। মাস্ক হতে হবে বাধ্যতামূলক।

তিনি আরো বলেন, ‘‘তবে মনে রাখতে হবে শুধু পরীক্ষা নেয়াই যেন খোলার উদ্দেশ্য না হয়। শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান বজায় রাখার দিকে যেন নজর দেয়া হয়।”

তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আগে আমাদের যে আলোচনা হয়েছে তাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিজেদের সিদ্ধান্তে খুলবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৩০ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশুনা করে। যদি সবাইকে ক্লাসে আনতে হয় তাহলে তার আগে ৬০ লাখ টিকা নিশ্চিত করতে হবে। এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে আট লাখের এনআইডি আছে, বাকিদের নাই। এনআইডি ছাড়া টিকা দেয়া গেলেও সনদ পাওয়া যাবেনা। এই বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজলোতে আমরা হয়তো সশরীরে পরীক্ষা নিতে পারব। কিন্তু ক্লাস আরো অনেক দিন অনলাইনে নিতে হবে। আর কলেজগুলোর ক্লাসরুম তো এত বেশি নাই যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে ক্লাসে নেয়া যাবে।”

তার মতে, সংক্রমণ কম গেছে মানে করোনা চলে যায়নি। এখনো শতকরা পাঁচভাগের নিচে নামেনি। তাই চাইলেই সব কিছু করা যাাবেনা।

শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, করোনা সংক্রান্ত জাতীয় পরার্শক কমিটির গাইডলাইন মেনেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা হবে। তাদের সাথে পরামর্শ করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

পরামর্শক কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা.মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘‘এখন সংক্রমণ ১০ ভাগের নিচে৷ টিকা দেয়া হচ্ছে এবং আরো টিকা আসছে। ফলে এখনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সঠিক সময়। আমরা সরকার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অভিভাবদের জন্য একটি গাইডলাইন দিয়েছি। এটা সবার জন্য প্রকাশ করা হবে। এই গাইডলাইন অনুসরণ করলে আশা করি কোনো সমস্যা হবেনা৷ স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে।”

করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button