পাসপোর্ট অফিসে এক নারীকে যৌন হয়রানি করে কর্মকর্তা, ৯৯৯-এ ফোন
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কুড়িগ্রাম জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারের বিরুদ্ধে অফিসের ভেতরেই এক সেবাগ্রহীতা নারীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (২১ আগস্ট ) বিকালে কুড়িগ্রাম আঞ্চলিক অফিসে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর পর উপস্থিত লোকজন ৯৯৯-এ ফোন করে সহায়তা চাইলে ওই নারীকে উদ্ধার করে থানায় নেয় পুলিশ। তবে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে আটক করা হয়নি।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেন, প্রায় দেড় মাস আগে তিনি একটি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। স্বামী বিদেশে অবস্থান করায় তিনি নিজেই এ আবেদন করেন। কিন্তু আবেদনে সমস্যা আছে জানিয়ে পাসপোর্ট কর্মকর্তা মোত্তালেব তাকে ফোন দিয়ে অফিসে আসতে বলেন।
ওই নারী আরও জানান, মঙ্গলবার তিনি পাসপোর্ট অফিসে এসে মোত্তালেব সরকারের সঙ্গে দেখা করেন। মোত্তালেব তাকে তৃতীয় তলার একটি কক্ষে যেতে বলেন। ওই কক্ষে তার আবেদনপত্র সংশোধন করতে হবে বলে জানান। সেখানে গেলে মোত্তালেব কক্ষে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে দেন এবং তাকে যৌন হয়রানি করেন। এ সময় ওই নারীর চিৎকারে অফিসে উপস্থিত অন্য লোকজন গিয়ে ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে তাকে উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক ব্যক্তি জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহায়তা চান। পরে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশ ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসলেও অভিযুক্ত মোত্তালেব সরকারকে আটক করেনি।
এদিকে, এ ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত ও সাজানো বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত উপসহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকার।
তবে ওই নারীকে ফোন দিয়ে ডাকার কথা স্বীকার করে মোত্তালেব বলেন, ‘অফিস থেকে ফোন দিয়ে তার সনদ জমা ও স্বাক্ষর দিতে বলা হয়েছে। তিনি আজ এসে সেগুলো দিয়ে যান। আবার ফিরে এসে ২৫ তারিখের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়ার দাবি করেন। পরে তিনি এই সিনক্রিয়েট করেন।’
ওই নারীকে কেন তিন তলায় পাঠিয়ে আপনি কক্ষে প্রবেশ করলেন, এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি ওই কক্ষে যাইনি।’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সদর থানায় ওই নারীকে একটি কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
ওসি খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা ওই নারীর অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তিনি লিখিত অভিযোগ করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো। তবে এ ঘটনার কোনও ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে কিনা আমরা তাও খতিয়ে দেখছি। কারণ, ওই নারীর সঙ্গে পাসপোর্ট অফিসের কয়েকজন দালালের যোগসাজশের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।’
থানায় উপস্থিত ভুক্তভোগী ওই নারীর বলেন, ‘আমি খুব মানসিক চাপে আছি। আমি যা বলেছি, তার সব সত্য।’
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন