ডেসটিনি: ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের অর্থ ফিরিয়ে দিতে কমিটি গঠনের নির্দেশনা

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করতে সরকারকে নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলার রায়ে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এই নির্দেশনা দেন। 

সংবাদ মাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম।

পিপি সালাম বলেন, এই মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন, কোম্পানির প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদসহ ৪৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

পিপি সালাম আরও বলেন, যেসব গ্রাহক ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডে বিনিয়োগ করে নিঃস্ব হয়েছেন, তাঁদের জন্য করণীয় ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। কমিটির প্রধান হবেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার জন্য দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

কত দিনের মধ্যে কমিটি গঠন ও গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে, সে বিষয় কোনো নির্দেশনা আদালত দিয়েছেন কি না, জানতে চাইলে পিপি সালাম বলেন, মামলার রায় এক হাজার পৃষ্ঠার। পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে না পাওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।

রায়ে রফিকুলকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড ২০০ কোটি টাকা। ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। হারুন-অর-রশীদকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বাকি আসামিদের ৫ থেকে ৯ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় রফিকুল, হারুন-অর-রশীদসহ সাত আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। রায় ঘোষণার পর শতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক আদালত প্রাঙ্গণে বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেন।

২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় মামলাটি করে দুদক। দুই বছর তদন্তের পর ২০১৪ সালের ৪ মে মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। মামলায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৯০০ কোটির বেশি টাকা সংগ্রহ করা হয়। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এই অর্থ আত্মসাতের কারণে সাড়ে আট লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হন।

২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। মামলায় ২০২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। মামলায় গত ২৭ মার্চ উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। আজ রায় ঘোষণা করা হলো।

 

সূত্র: প্রথম আলো

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button