কালীগঞ্জে কুপিয়ে ও পিটিয়ে ৪ জনকে জখম, সারোয়ার মেম্বারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ!

নিজস্ব সংবাদদাতা : মাদকের কবল থেকে যুব সমাজকে রক্ষার জন্য এর বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখতে ২০২০ সালে ২৯ জানয়ারি জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। এরপরও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে মাদকের কারবার। এমনই এক এলাকা কালীগঞ্জের বক্তারপুর ইউনিয়নের ফুলদী গ্রাম। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য ইকবাল হোসেন সারোয়ার (৩৮) দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার এবং নিজ ক্ষমতাবলে ফুলদী এলাকাকে মাদকের আখড়ায় পরিণত করেছে।

কেউ এসবের প্রতিবাদ করলে শিকার হতে হয় হামলাসহ নানা ধরনের হয়রানির। গত ১ অক্টোবর ফুলদী বাজারে ইকবাল হোসেন সারোয়ারের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে চারজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। এরপর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও এখনো পর্যন্ত আইনগত কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছে না পুলিশ।

বুধবার (০৫ অক্টোবর) বিকেলে গাজীপুর শহরে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

অপরদিকে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিসুর রহমানের দাবী, এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগই করেনি!

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে হামলায় আহত শাখাওয়াত হোসেন স্বপন। এ সময় হামলায় আহত অন্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তাদের বাড়ি কালীগঞ্জের ফুলদী এলাকায়।

লিখিত বক্তব্য ও ভুক্তভোগীরা জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য ইকবাল হোসেন সারোয়ার (৩৮) মাদক ব্যবসায় জড়িত। এ কারণে স্থানীয় ফুলদীসহ আশপাশের এলাকার যুব সমাজ মাদক সেবনে অভ্যস্থ হয়ে পড়ছে। এতে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে। যুব সমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখতে, এলাকা মাদক মুক্ত করতে মাদক ব্যবসা বন্ধ এবং এলাকার শান্তি শৃঙ্খলার জন্য এলাকাবাসী ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে গণ স্বাক্ষর সম্বলিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে গাজীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে। ওই অভিযোগে স্বাক্ষর দিয়েছিল ভুক্তভোগী সাখাওয়াত হোসেন স্বপন (২৮)। তাই গত ১ অক্টোবর ফুলদী বাজারে যাওয়ার সময় আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা ইউপি সদস্যসহ ১৪/১৫ জন তার গতিরোধ করে। পরে তারা দেশী অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত যখম করে। এসম স্বপনের ডাকচিৎকারে তার পিতা শাজাহান শেখ (৬০) এবং দুই চাচা আব্দুল কাদির শেখ (৬৫) ও জাহাঙ্গীর আলম শেখ (৫২) ঘটনাস্থলে এগিয়ে যান। এক পর্যায়ে তাদেরকেও পিটিয়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কুপিয়ে জখম করে। এ সময় ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে একটি স্মার্টফোন ও নগদ ৫০ হাজার টাকা লুট করে নেয়। পুনরায় কারো কাছে অভিযোগ করলে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ইউপি মেম্বর ও তার লোকজন চলে যায়। পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পাঠায়।

সাখাওয়াত হোসেন স্বপন অভিযোগ করেন, এ ব্যাপারে তিনি বাদী কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দাখিল করলেও পুলিশ এখনো মামলা নেয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান মঞ্জু ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আফজাল হোসেন বিপ্লব, বক্তারপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মাহের হোসেন প্রমুুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন সারোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগকারীরা আমার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বি। সাখাওয়াত হোসেন স্বপন আমার মায়ের পায়ে উপর মোটরসাইকেল উঠিয়ে দেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তারাই আমাদের উপর হামলা ওপর হামলা ও দোকান লুটপাট করে।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button