কক্সবাজারে ট্রলার থেকে হাত-পা বাঁধা ১০ জেলের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কক্সবাজার শহরের উপকূলবর্তী এলাকায় একটি ট্রলার থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ১০ জেলের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রোববার (২৩ এপ্রিল) বেলা ৩টার দিকে শহরের বাঁকখালী নদীর মোহনার নাজিরারটেক পয়েন্ট থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “লাশগুলো অর্ধগলিত অবস্থায় পাওয়া গেছে; জেলেদের চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। এর কারণে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।”

নাজিরারটেক পয়েন্টের স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল মিয়া সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, গতকাল বিকাল ৪টার দিকে একটি জেলে নৌকা মাছ ধরে ফেরার পথে উপকূলের অদূরবর্তী সমুদ্রে একটি অর্ধনিমজ্জিত মাছ ধরার ট্রলার দেখতে পায়। তাদের ধারণা হয়, দুদিন আগের ঝড়ে হয়তো ট্রলারটি ডুবে গেছে। জেলেরা ট্রলার ফেলে চলে এসেছে। তখন তারা এই ট্রলারটিকে টেনে উপকূলের কাছাকাছি নিয়ে আসেন।

“সন্ধ্যার দিকে স্থানীয়রা সেই মাছ ধরার ট্রলারে একজনের পা দেখতে পান। তখন তারা বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানান। কাউন্সিলর বিষয়টি পুলিশকে জানায়।

রুবেল বলেন, খবর পেয়ে রাতে পুলিশ আসে। কিন্তু তখন ট্রলারটি উপকূল থেকে খানিকটা দূরে সমুদ্রের দিকে চলে যায়। পুলিশ সেখানে যেতে পারেনি। ফলে তারা ফিরে যায়।

সকালে পুলিশ আবারও ঘটনাস্থলে যায় এবং জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার অপেক্ষা করতে থাকে। পুলিশ এ সময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যদের খবর দেয়।

ফায়ার সার্ভিসের কক্সবাজার স্টেশনের ঊর্ধ্বতন স্টেশন কর্মকর্তা খান খলিলুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “মরদেহগুলো মাছ ধরার ট্রলারের কোল্ড স্টোরেজের ভিতরে তালাবাদ্ধ অবস্থায় ছিল। সেখানে একটার উপর আরেকটা মরদেহ স্তুপ করা ছিল।

“ধারণা করা হচ্ছে, মরদেহগুলো ১০ থেকে ১৫ দিন আগের। চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে এবং পঁচা দুগন্ধ বেরচ্ছে। শরীরে আঘাতের চিহ্ন বোঝা যাচ্ছে না। তবে হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হচ্ছে।”

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, উদ্ধার হওয়া লাশগুলোর সব কটি বিকৃত হয়ে গেছে। এর মধ্যে ছয়জনের হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে। লাশ থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কমপক্ষে ১৫ দিন আগে গভীর সমুদ্রে জলদস্যুরা ট্রলারটির মাছ–জাল লুট করে জেলেদের হাত–পা বেঁধে কুটিরে (ট্রলারে মাছ ও বরফ সংরক্ষণের কক্ষ) আটকে রেখে ট্রলারটি সাগরে ডুবিয়ে দিতে পারে। বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে আরও বলেন, মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহগুলো শনাক্ত করা গেলে হত্যার কারণ হয়তো জানা যেতে পারে। পুলিশ এরই মধ্যে এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button