বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু, তুরাগ তীরে জনসমুদ্র

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : আমবয়ানের মধ্য দিয়ে টঙ্গীতে শুরু হয়েছে তাবলীগ জামাতের তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ইতোমধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে ইজতেমার মাঠ। ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশের লাখো মুসলিম জনতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে টঙ্গীর তুরাগ তীর। তাদের আগমন অব্যাহত রয়েছে।

শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ফজরের নামাজের পরে শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমার ৫৭তম আসর। আগামী রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।

পাকিস্তানের মাওলানা আহমদ বাটলার আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। আর তা তাৎক্ষণিকভাবে বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা নুরুর রহমান। সকাল ১০টায় তালিম করবেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক সাহেব। তার তালিমের পরপরই দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজের প্রস্তুতি শুরু করা হবে। শুক্রবার জুমার নামাজ পড়াবেন মাওলানা জুবায়ের সাহেব। জুমার নামাজের পর বয়ান করবেন জর্ডানের মাওলানা খতিব সাহেব, আছরের নামাজের পর বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা জুবায়ের সাহেব ও মাগরিবের পর ভারতের মাওলানা আহমদ লাট সাহেব বয়ান করবেন।

প্রথম পর্বের ইজতেমায় যোগ দিতে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের উপস্থিতি বাড়ছে। বাস, ট্রাক, ট্রেন ও হেঁটে টুপি-পাঞ্জাবি পরিহিত মুসল্লিরা টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে আসছেন। রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মুসল্লিদের এ আগমন অব্যাহত থাকবে। ময়দানের পশ্চিমে তুরাগ নদের পূর্ব পাশে নামাজের মিম্বর এবং উত্তর-পশ্চিম পাশে বিদেশী মুসল্লিদের কামড়ার পাশে বয়ান মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। নামাজের মিম্বর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ইমাম এবং বয়ানের মঞ্চে বয়ানকারী অবস্থান করেন। বয়ান মঞ্চ থেকে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করা হবে। ইজতেমার প্রচলিত রেওয়াজ অনুসারে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় মহাসমাবেশ কোনো আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ছাড়াই শুরু হবে। সভাপতিহীন এই মহাসমাবেশে থাকছে না কোনো প্রধান বা বিশেষ অতিথি। নাম-পদবি ছাড়াই বিভিন্ন দেশের ওলামায়ে কেরামগণ এই সম্মেলনে তাবলিগের জামাতের রীতি অনুসারে শুধু ধর্মীয় অরাজনৈতিক বয়ান পেশ করবেন। এবারের ইজতেমায় চট সঙ্কট থাকায় নিজ উদ্যোগে সামিয়ানা ও চট টাঙ্গানোর কাজ করতে দেখা গেছে মুসল্লিদেরকে।

প্রথম পর্বের মিডিয়াবিষয়ক জিম্মাদার মুফতি জহির ইবনে মুসলিম সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের বিভিন্ন খিত্তায় নির্ধারিত বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা এসে অবস্থান নেবেন। আগত মুসল্লিদের ইজতেমার কর্মসূচিতে অংশ নিতে ও তাদের সব ধরনের সেবা প্রদানে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রায় এক বর্গ কিলোমিটার আয়তনের মাঠটিতে বাঁশের খুঁটির ওপর ছাউনির মধ্যে মুসল্লিদের বয়ান শোনার জন্য লাগানো হয়েছে বিশেষ ছাতা মাইক। লাগানো হয়েছে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক বাতি। দেশীয় তবলিগের মুসল্লিদের জন্য জেলাওয়ারি আলাদা খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। দেশ-বিদেশ থেকে আসা মেহমানরা ঢাকার কাকরাইল মসজিদ, টঙ্গী ও গাজীপুরের বিভিন্ন মসজিদে গাস্তের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। ময়দানের উত্তর-পশ্চিম দিকে আন্তর্জাতিক নিবাসে বিদেশী মেহমানদের খাবার সরবরাহ, খাবার তৈরি ও পরিবেশনসহ খেদমতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীকে প্রস্তুত করা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button