শ্রীপুরে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ : জমির মালিকানা দাবি করে বন বিভাগের মামলা
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : শ্রীপুরের চাওবন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণে বাধা দিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীসহ চারজনের নামে মামলা করেছে বন বিভাগ। মামলায় অন্য অভিযুক্তরা হলেন ভবন নির্মাণের ঠিকাদার, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
বন বিভাগের দাবি, যেখানে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, সেটি বন বিভাগের জমি। এখানে ভবন নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই।
শ্রীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের চাওবন গ্রামে স্থানীয় উদ্যোগে বিদ্যালয়টি গড়ে তোলা হয় ১৯৭২ সালে। মাটির ঘর তুলে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর পর ১৯৭৪ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হয়। এরপর বিদ্যালয়ের জন্য একটি পাকা ভবন নির্মাণ করা হয় ১৯৯২ সালে। পরে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়ে গেলে আগের মাটির ঘরের স্থানে নতুন ভবন নির্মানের আবেদন করা হয়। আশপাশের চার কিলোমিটারের মধ্যে একমাত্র এ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ১২৩ জন।
শ্রীপুর উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মাসুদুল হক জানান, চাওবন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরনো ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় নতুনভাবে ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৭৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি দোতলা ভবন নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ দেয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজকে। কার্যাদেশ অনুযায়ী ৫০ ভাগ কাজ শেষ করার পর বন বিভাগ বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জায়গাটি তাদের বলে দাবি করে। এরপর তারা গত এপ্রিল ও মে মাসে চারজনের বিরুদ্ধে গাজীপুর আদালতে দুটি মামলা করে। সম্প্রতি সমন এলে তারা মামলার বিষয়ে অবগত হন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রায় ৪৭ বছর ধরে এখানে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আগে বন বিভাগ জমিটি তাদের বলে দাবিও করেনি। সম্প্রতি তারা জমিটি নিজেদের বলে দাবি করে মামলা করেছে।
গোসিঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহজাহান সরকার বলেন, এ এলাকার শিক্ষা বিস্তারের কথা বিবেচনা করে বন বিভাগের সহনীয় অবস্থান আমরা কামনা করেছিলাম। কিন্তু তারা সরকারের আরেক দপ্তরের কর্মকর্তাদের নামে মামলা করেছে। আমাদের দাবি, দ্রুত বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. ইউসুফ জানান, নির্মাণাধীন বিদ্যালয় ভবনের ওই জমির মালিক বন বিভাগ। ভবন নির্মাণের আগে এ জায়গার মালিকানার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে দরপত্র আহ্বান করা উচিত ছিল। তা না করায় এ জটিলতা তৈরি হয়েছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাজ বন্ধ রাখার বিষয়ে অবহিত করেছিলাম। এতে কেউ সাড়া না দিয়ে কাজ অব্যাহত রাখে। তাই আমরা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।
সূত্র: বণিক বার্তা