আন্তর্জাতিকআলোচিত

ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সামরিক অভিযান শুরু

গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দীর্ঘদিনের কাশ্মীর বিরোধকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে টানা সংঘর্ষের পর শনিবার (১০ মে) ভোরে পাকিস্তান একটি সামরিক অভিযান শুরু করেছে বলে জানিয়েছে। অভিযানে ভারতের একাধিক সামরিক ঘাঁটি, যার মধ্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র গুদামও রয়েছে, লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

পাকিস্তানের দাবি, ভারতের তরফ থেকে ইসলামাবাদ সংলগ্ন একটি ঘাঁটিসহ তিনটি বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছিল, তবে বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আটকাতে সক্ষম হয়েছে।

পাকিস্তানের পাল্টা হামলা: পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানায়, “ব্রাহমোস ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণস্থল ধ্বংস করা হয়েছে বেয়াস অঞ্চলে।” আরও জানানো হয়, ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের পাঠানকোট বিমানঘাঁটি ও কাশ্মীরের উধমপুর বিমানঘাঁটিও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী এক্স-এ (সাবেক টুইটার) জানান, অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে “অপারেশন বুনইয়ানুন মারসুস”, যা কোরআন থেকে নেওয়া একটি শব্দগুচ্ছ, অর্থ “দৃঢ় ও ঐক্যবদ্ধ কাঠামো”।

জম্মুর রেহারিতে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের পর আশেপাশে ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহন দেখা যাচ্ছে।

পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী স্থানীয় টিভিতে বলেন, বেসামরিক লক্ষ্যবস্তু এড়িয়ে চলার জন্য “বিশেষ ব্যবস্থা” নেওয়া হয়েছে এবং শুধুমাত্র সেসব স্থান লক্ষ্য করা হয়েছে যেগুলো থেকে পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছিল।

ভারতের প্রতিক্রিয়া: ভারতের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা শিগগিরই মিডিয়াকে ব্রিফ করবে।

ভারতীয় কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এক বিবৃতিতে জানান, রাজৌরিতে গোলাবর্ষণে একজন সরকারি কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, শুক্রবার তারা পাকিস্তানের একাধিক ড্রোন ভূপাতিত করেছে এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পাল্টা গোলাবর্ষণ চালিয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: গ্রুপ অব সেভেন (G7) দেশগুলো ভারত ও পাকিস্তানকে “সর্বোচ্চ সংযম” দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে এবং সরাসরি আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়েছে। ব্রিটিশ হাইকমিশনার জেইন ম্যারিয়ট এক্স-এ এক পোস্টে বলেন, তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।

ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি: বুধবার থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের তথ্য অনুযায়ী অন্তত ৪৮ জন নিহত হয়েছে, যদিও এই সংখ্যাগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

সংঘর্ষের শব্দ শোনা গেছে ভারতের শ্রীনগর, জম্মু, পাকিস্তানের লাহোর ও পেশোয়ার শহরে। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে।

উভয় পক্ষের দোষারোপ ও প্রতিআক্রমণের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধাবস্থার আশঙ্কা বাড়ছে। আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি এখন ভারত-পাকিস্তানের দিকে, কারণ পরমাণু অস্ত্রধারী দুই দেশের সংঘর্ষ যে কোনো সময় আরও বড় রূপ নিতে পারে।

সূত্র : রয়টার্স

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button