শিবপুরের কুখ্যাত জুম্মনসহ গণপিটুনিতে দুই ডাকাত কালীগঞ্জে নিহত
গাজীপুর কণ্ঠ : এক বাড়িতে ডাকাতি শেষে আরেক বাড়িতে ডাকাতি করতে গেলে গণপিটুনিতে শিবপুরের কুখ্যাত ডাকাত জুম্মনসহ দুই ডাকাত নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরীর রাথুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগেও কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলেও অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী।
নিহতরা হলো- নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার সাধারচর এলাকার আব্দুল আউয়ালের ছেলে কুখ্যাত ডাকাত ওমর ফারুক ওরফে জুম্মন (৩৮), একই জেলার মাধবদী থানার মৈশাদি মিল্কী পাড়া এলাকার সোয়াদ আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪০)।
স্থানীয়রা জানান, ডাকাতেরা একটি বাড়িতে ডাকাতি শেষে প্রতিবেশী আরেকটি বাড়িতে ডাকাতি করতে গেলে গ্রামবাসী দু’জনকে আটক করে রাথুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। ডাকাত দলের অন্যরা ককটেল ফাটিয়ে পালিয়ে যায়। ডাকাতদের ব্যবহৃত রাম দা, চাপাতি, কার্টার ও দরজা ভাঙ্গার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।
কালীগঞ্জের নাগরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির ও গ্রামবাসী জানান, রাত আনুমাণিক ২টার দিকে কমপক্ষে ১০ জনের একদল ডাকাত রাথুরা এলাকার মৃত মাওলানা মাজনুনের স্ত্রী রাবেয়া বেগমের বাড়িতে দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে স্বর্ণালঙ্কার ও মালামাল লুট করে। পরে প্রতিবেশী সায়েম আকন্দের বাড়ির গেইটের তালা কেটে বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করে। এসময় বাড়ির লোকজন টের পেয়ে মোবাইল ফোনে প্রতিবেশীদের জানায়। পরে গ্রামবাসী স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ডাকাতদের ধাওয়া করে। দুই ডাকাতদের আটক করে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং পুলিশকে অবহিত করে।
স্থানীয় উলুখোলা পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. গোলাম মাওলা জানান, ডাকাতদের আটক করে গ্রামবাসী গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই ডাকাত মারা যায়। তাদের অপর সহযোগীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ডাকাতদের ব্যবহৃত রাম দা, চাপাতি, কার্টার ও দরজা ভাঙ্গার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত তিন সপ্তাহে কালীগঞ্জে ডাকাতের উৎপাত বেড়েছে। ৮ জানুয়ারি রাতে উপজেলার তুমুলিয়া ইউনিয়নের পুইনারটেক গ্রামের কবির উদ্দিন ভূঁইয়া, নুরুল ইসলাম ও চুয়ারিয়া খোলা গ্রামের হুমায়ুন মাষ্টার ও রমেশ চন্দ্র দাসের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতেরা দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে। তারা অস্ত্রের মুখে বাড়ীর লোকদের হাত-পা বেঁধে নগদ টাকা, স্বার্ণালঙ্কার ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, ডাকাতির ঘটনাগুলো জনমনে নিরাপত্তাহীন পরিবেশের সৃষ্টি করছে।
এসব বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর মিয়া জানান, গণপিটুনিতে নিহতের ঘটনায় মামলার হয়েছে। বিগত সময়ে অন্য যে সকল ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে সেগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি। কালীগঞ্জে একটি সিএনজিচালিত অটোরিক্সা চুরির ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন। তবে ওইসব ঘটনায় মামলা হয়নি।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, নিহতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৮/১০টি করে মামলা রয়েছে।