ভিটামিন বি-১২ এর অভাব পূরণে করণীয়

গাজীপুর কণ্ঠ, স্বাস্থ্য ডেস্ক : ভিটামিন বি-১২ শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান। শরীরে ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতি হলে স্নায়বিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া এই ভিটামিনের অভাবে অবসাদ, ক্লান্তি, হতাশা, বিরক্তিবোধ, মানসিক চাপ ইত্যাদি সমস্যা বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন বি-১২ শরীরে লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে ভূমিকা রাখে। এর অভাবে তাই রক্তশূন্যতাও হতে পারে। এছাড়া স্নায়ুর কার্যকারিতা ও ডিএনএ গঠনেও ভিটামিন বি-১২ এর গুরুত্ব অপরিসীম।

ভিটামিন বি-১২ এর অভাবজনিত লক্ষণগুলো হচ্ছে :

-অবসাদ ও ক্লান্তিবোধ

– শরীরের ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া

– শারীরিক দুর্বলতা

– কোষ্ঠকাঠিন্য

– রুচি কমে যাওয়া

– ওজন হ্রাস পাওয়া

– বিষণ্ণতা

– সহজেই কোনো কিছু ভুলে যাওয়া

– দুর্বল স্মৃতিশক্তি

– শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সমস্যা অনুভূত হওয়া

কী খাবেন

আমাদের শরীরে প্রতিদিন ২.৪ মাইক্রোগ্রাম পরিমাণ ভিটামিন বি-১২ প্রয়োজন। গর্ভবতী এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর মায়েদের ক্ষেত্রে এই চাহিদা একটু বেশি। গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে দৈনিক ২.৬ মাইক্রোগ্রাম এবং বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের ক্ষেত্রে দৈনিক ২.৮ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন বি-১২ প্রয়োজন। নিয়মিত ভিটামিন বি-১২ সমৃদ্ধ খাবার খেলেই এর অভাবজনিত সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ভিটামিন বি-১২ সমৃদ্ধ খাবারগুলো হচ্ছে:

ডিম : ডিম ভিটামিন বি-১২ এর অন্যতম প্রধান উৎস। প্রতি একশ গ্রাম ডিমে ০.৮ থেকে ০.৯ মাইক্রোগ্রাম পরিমাণ ভিটামিন বি-১২ থাকে। তবে কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে ডিম খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডিম খাওয়া উচিত।

দুধ : ভিটামিন বি-১২ এর উৎকৃষ্ট উৎস হচ্ছে দুধ। নিয়মিত দুধ খেলে নিজের শারীরিক অবস্থার উন্নতির পাশাপাশি ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতিও পূরণ হবে। মনে রাখবেন, কম চর্বিযুক্ত এক কাপ দুধে ১.২ মাইক্রোগ্রাম পরিমাণ ভিটামিন বি-১২ পাওয়া যায়।

কম চর্বিযুক্ত দই : দই থেকে দৈনিক চাহিদার অর্ধেক পরিমাণ ভিটামিন বি-১২ পাওয়া যায়। নিয়মিত খাওয়ার জন্য অবশ্যই চর্বির পরিমাণ কম এমন দই বেছে নিতে হবে।

মাছ ও মুরগি : মাছ ও মুরগি ভিটামিন বি-১২ এর ভালো উৎস। যারা গরু বা খাসির মাংস এড়িয়ে চলেন তারা ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতি পূরণে মাছ ও মুরগি খেতে পারেন। ভিটামিন বি-১২ এর অভাবজনিত লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা করা উচিত নয়। দীর্ঘমেয়াদে এই ভিটামিনের ঘাটতি থাকলে হৃদরোগসহ নানা ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ঝুঁকি বাড়ে। তাই সমস্যা অনুভূত হলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ডা. শাহ মোহাম্মদ ফাহিম

চিকিৎসক, পুষ্টি ও চিকিৎসাসেবা বিভাগ
আন্তর্জাতিক উদরাময় কেন্দ্র
বাংলাদেশ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button