অবিলম্বে কাশ্মির ছাড়তে সেনাবাহিনীকে হিজবুলের হুঁশিয়ারি
গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অবিলম্বে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে কাশ্মির ত্যাগের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সেখানকার স্থানীয় সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন। সংগঠনের শীর্ষ নেতা রিয়াজ নাইকু হুমকি দিয়েছেন, সেনারা কাশ্মির না ছাড়লে তাদের কফিন মিছিলও থামবে না। সুদীর্ঘ এক অডিও বার্তায় নাইকু বলেছেন, কাশ্মির না ছাড়লে পুলওয়ামার ঘটনার মতো করেই নতুন নতুন ঘটনায় ভারতকে ‘কাঁদতে’ হবে।
১৪ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) পুলওয়ামাতে আরডিএক্স বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে ‘সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স’র গাড়ি বহরে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। এতে বহরের ৭০টি গাড়ির মধ্যে একটি বাস সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়ে যায়। প্রাণ হারায় বাহিনীর অন্তত ৪৪ সদস্য। হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ। পুলওয়ামা হামলার প্রতিক্রিয়ায় স্থানীয় হিজবুল মুজাহিদিনের অপারেশনাল কমান্ডার রিয়াজ নাইকু সেনাবাহিনীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘যতোক্ষণ না তোমরা কাশ্মির ছাড়ছ, এভাবেই কাঁদতে হবে তোমাদের। যতোক্ষণ তোমরা এখানে থাকবে, ততোক্ষণ তোমার সেনাদের কফিন ভরতে থাকবে মরদেহে।’
১৯ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) রিয়াজ নাইকু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তার এই অডিও বার্তাটি জনসম্মুখে আনেন। একইদিনে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল কে এস ঢিলোঁ সেনাপ্রধানের পূর্ববর্তী অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে হুমকি দেন, কাশ্মিরে কেউ অস্ত্র হাতে তুলে নিলেই তাকে গুলি খেতে হবে। জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় বেসামরিকদের হস্তক্ষেপ না করার হুমকিও দেন তিনি। এরআগে সেনা অভিযানে বাধা দিলে কঠোর পরিণতি বরণ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল বিপীন রাওয়াত। অভিভাবকদের আহ্বান জানিয়েছিলেন, তরুণদের সঠিক পথে ফেরাতে। কাশ্মিরের সাম্প্রতিক বাস্তবতা পর্যালোচনা করে বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক পথে কাশ্মির সংকটের সমাধান আসবে না। তবুও বলপ্রয়োগের নীতির পথেই এগোচ্ছে ভারত।
হৃদয় জয়ের বদলে বলপ্রয়োগের পথে গেলে কাশ্মিরিদের মধ্যে যে আরও বেশি বিচ্ছিন্নতার বোধ জেগে উঠবে; কদিন আগে তা স্পষ্ট করে বলেছেন স্বয়ং একজন সাবেক সেনাকর্মকর্তা। সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল সৈয়দ আতা হাসনাইন গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নিউজএইটটিনকে বলেছেন, ‘আইইডি নামে পরিচিত বিশেষায়িত বোমা ব্যবহার করে কাশ্মিরে সিআরপিএফের গাড়ি বহরে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি যে হামলা চালানো হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে বাড়বে নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা। বসানো হবে বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা চৌকি। আর হামলাকারীদেরই তা সুবিধা এনে দেবে। যত বেশি কড়াকড়ি করা হবে, তত বেশি মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে থাকবে। হয়রানির কারণে কাশ্মিরিদের সমর্থন সরে যাবে তাদের পক্ষেই, ভারত যাদেরকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে চায়’।