প্রেমের টানে কালীগঞ্জে এসে হামলার শিকার শ্রী দেবী, থানায় অভিযোগ দিয়েও ঘুরছে দ্বারে দ্বারে!

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : প্রেমের টানে উত্তরা থেকে কালীগঞ্জে এসে বিপাকে পড়েছে শ্রী দেবী বর্মণ(২৫) নামে এক যুবতী। একপর্যায়ে হামলার ঘটনাও ঘটে তার উপরে। পরে কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিয়েও কোন বিচার না পেয়ে এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ওই যুবতী।

সম্প্রতি কালীগঞ্জের বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের বাশাইর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত প্রেমিক সাধন বর্মণ (২৮)। সে বাশাইর এলাকার মৃত প্রাণ গোপাল বর্মণের ছেলে। সে বাশাইর বাজারে ইলেকট্রনিক্স মেকানিকের কাজ করে। এছাড়াও অন্য অভিযুক্তরা হলো একই এলাকার লিটন বণিক (৫৫), গৌতম বর্মণ (৩০) এবং অনিতা রাণী (৫৫)।

ভুক্তভোগী শ্রী দেবী বর্মণ উত্তরার দক্ষিনখান এলাকার নিরঞ্জন বর্মনের মেয়ে।

ভুক্তভোগী শ্রী দেবী বর্মণ ও অভিযুক্ত প্রেমিক সাধন বর্মণ (ফাইল ফটো)।

থানায় দায়ের করা এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, গত দুই বছর আগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে শ্রী দেবীর সঙ্গে সাধন বর্মণের পরিচয় হয়। এরপর থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। সম্প্রতি শ্রী দেবীর পরিবার অন্যত্র তার বিয়ে ঠিক করে। বিষয়টি শ্রী দেবী তার প্রেমিক সাধনকে জানায়। পরে শ্রী দেবীকে সাধন তার বাড়ি চলে আসতে বলে। গত ২৪ জুন বৃহস্পতিবার শ্রী দেবীর আর্শীবাদ অনুষ্ঠিত হওয়ার দিন নির্ধারিত হয়। ওই দিনই শ্রী দেবী তার বাড়ির কাউকে কিছু না জানিয়ে সন্ধ্যা পৌণে ছয়টার দিকে সাধনের দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী বাশাইর বাজারে তার দোকানে চলে আসে। পরে দোকান থেকে সন্ধ্যা পৌণে সাতটার দিকে সাধন তার বাড়িতে নিয়ে যায় শ্রী দেবীকে। এর কিছু সময় পর সাধন জরুরী কাজের কথা বলে বাড়ির বাহিরে যায়।

এজাহারে আরো উল্লেখ আছে, এরপর সাধন ফোন করে শ্রী দেবীকে তার বাবার বাড়ি ফিরে যেতে বলে। এতো রাতে লকডাউনের মধ্যে বাড়ি যেতে সমস্যা হবে জানালে শ্রী দেবীকে ঘরে বসতে বলে সাধন। পরে রাত আনুমানিক বারোটার দিকে অভিযুক্ত অন্যরাসহ সাধন ঘরে এসে শ্রী দেবীকে গালাগাল এবং মারধর করে। পরে স্থানীয় লোকজনের অনুরোধে শ্রী দেবীকে সাধন তার এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে আসে। পরদিন ২৫ জুন (শুক্রবার) শ্রী দেবীর সঙ্গে সাধনের বিয়ে হবে বলে তার ছোট বোন ও তার স্বামীকে ডেকে আনে। পরে সাধনের বাড়িতে গেলে বিয়ে হবে না বলে জানায় অভিযুক্তরা। এর মধ্যে সাধন আত্মগোপন চলে যায়। এরপর তারা শ্রী দেবীসহ তাদের ভয়ভীতি দেখায়। এছাড়াও শ্রী দেবীসহ তাদের চলে যেতে বলে না হলে হত্যার হুমকি দেয় অভিযুক্তরা।

অভিযুক্ত সাধন বর্মণের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

ভুক্তভোগী শ্রী দেবী বলেন, ঘটনার পর আমি জাতীয় জরুরী সেবা নাম্বার ৯৯৯-এ ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানালে আমাকে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলেন। পরে শুক্রবার রাতে আমি থানায় এজাহার দায়ের করি। এরপর সারা রাত আমাকে থানাতেই বসিয়ে রাখে পুলিশ। পরদিন শনিবার দুপুর ১টার দিকে পুলিশ আমাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। অভিযুক্তদের খুঁজে না পেয়ে তাদের স্বজনদের বলে আসে অভিযুক্তদের নিয়ে রোববার থানায় আসতে। আমাকেও রোববার থানায় যেতে বলে পুলিশ। পরে রোববার বিকেল ৩টার দিকে আমি থানায় উপস্থিত হলেও অভিযুক্তরা আসেনি। পরে পুলিশ আমাকে উত্তরা থানায় অভিযোগ দিতে বলে। এখন আমি বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।

কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামাল উদ্দিন বলেন, “অভিযোগ দায়ের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। শ্রী দেবী ও সাধনের মধ্যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ছিল। ভুক্তভোগী শ্রী দেবী সাধনের বাড়ি এসে তাকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করছে বলে জানা গেছে।”

তিনি আরো বলেন, “শ্রী দেবীকে তার নিজ থানা উত্তরায় অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button