কাবুলে প্রবেশ করেছে তালেবানরা
গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানের সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা সবশেষ বড় শহর কাবুলে ঢুকতে শুরু করেছে তালেবানরা। তবে জোর করে কাবুল দখলের কোন পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
বার্তা সংস্থা এপি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আফগান কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, তালেবানের পক্ষ থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি দল প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের দিকে যাচ্ছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল সাত্তার মিরজাকওয়াল ধারণকৃত বক্তৃতায় ‘কাবুলের উপর কোন আক্রমণ হবে না’ এবং ‘অন্তবর্তীকালীন সরকারের হাতে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর’ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।
রোববার কাবুলজুড়েই গুলি ও সাইরেনের শব্দ শোনা যায়। যদিও তালেবানের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘কারো জীবন, সম্পত্তি ও মর্যাদার ক্ষতি করা হবে না। কাবুলের মানুষের জীবন ঝুঁকিতে ফেলা হবে না।’’
আল-জাজিরা ইংরেজিকে তালেবানের মুখপাত্র সুহায়েল শাহীন বলেন, রাজধানীর উপকণ্ঠে তাদের বাহিনী প্রবেশ করেছে। তালেবানরা কাবুলের শান্তিপূর্ণ হস্তান্তরের অপেক্ষায় আছে বলেও দাবি করেন তিনি। তালেবান ও সরকারের মধ্যে সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু বলতে তিনি অস্বীকৃতি জানান।
অন্যদিকে আফগান প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ মতিন বেক টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ভয় পাবেন না! কাবুল নিরাপদ!’’
দুই সপ্তাহ আগে তালেবানরা বিভিন্ন শহর দখলে নিতে শুরু করে। বর্তমানে কাবুল ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সব প্রাদেশিক রাজধানীই তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তালেবানরা ক্রমশ কাবুলের দিকে এগিয়ে আসায় গত কয়েকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সেখান থেকে তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিতে তোড়জোড় চালিয়ে আসছে।
এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল তিনমাসের মধ্যে তালেবানরা আফগানিস্তানে রাজধানী কাবুল দখলে নিতে পারে।
উল্লেখ্য গত সেপ্টেম্বরে কাতারের দোহায় আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে আলোচনা শুরু হলেও মধ্যস্থতাকারী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোন ফলাফল বের করে আনতে ব্যর্থ হয়েছে।
শনিবার আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি টেলিভিশন বক্তৃতায় বলেছেন, গত ২০ বছরে যা ‘অর্জিত’ হয়েছে তা তিনি ছেড়ে দিবেন না। দেশটি অস্থিরতা ও ভয়াবহ সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করা গানি ২০১৪ সালে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। পাঁচ বছর পর তিনি দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসেন।