মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ ঐক্যফ্রন্টে, অস্বস্তি মহাজোটেও
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : সিলেট-৫ ও ৬ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে গিয়ে জটিলতায় পড়েছে ঐক্যফ্রন্ট ও মহাজোট। সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি হাফিজ আহমদ মজুমদার চূড়ান্ত হলেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি এখানকার বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির সেলিমউদ্দিন।
সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় এখানে মহাজোটের সঙ্গে থাকা বিকল্পধারার শমসের মোবিন চৌধুরীও রয়েছেন ভোটের মাঠে।
আবার এই দুই আসনে ঐক্যফ্রন্টের একক প্রার্থী জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরীও। ফলে উভয় আসনেই প্রার্থীদের নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে ঐক্যফ্রন্ট ও মহাজোটে।
এর মধ্যে সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে ঐক্যফ্রন্ট একক প্রার্থী দিলেও এই মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন মনোনয়নবঞ্চিতরা। সিদ্ধান্ত বদল না হলে শিগগিরই প্রমাণসহ মনোনয়ন বাণিজ্যের বিস্তারিত তুলে ধরবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন শরিক দল নেজামে ইসলামের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুর রকিব। রবিবার বিকালে সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ হুমকি দেন।
তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত আরও দুই নেতা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খান ও জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী। এ আসনে ২০-দলীয় জোটের প্রার্থী বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরীকে জনবিচ্ছিন্ন দাবি করে তার জায়গায় অন্য যে কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে এমরান আহমদ বলেন, সিলেট-৬ আসনে বিএনপির এমন এক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে যিনি কোনোদিন দলের নেত্রীর জন্য মাঠে নামেননি। তিনি আঁতাতের রাজনীতির মাধ্যমে ব্যবসাবাণিজ্য করে যাচ্ছেন। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভুল বুঝিয়ে মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়েছেন। অথচ ওই আসনে নেজামে ইসলামের প্রার্থী অ্যাডভোকেট রকিবকে মনোনয়ন দেওয়ার কথা ছিল।
হেলাল খান বলেন, আমার বিশ্বাস ছিল সারাদেশে সাংস্কৃতিক কর্মী ও ক্রীড়াবিদদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। কিন্তু আমি হতাশ। ফয়সল চৌধুরীকে মনোনয়ন না দিয়ে অন্য কাউকে দিলে আমরা মেনে নিতাম। কারণ অন্য সবার দলের জন্য ত্যাগ রয়েছে। আমরা বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে ছিলাম। এ আসন নিয়ে মহাজোটে সৃষ্টি হয়েছে টানাপড়েন। সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
কিন্তু মহাজোটের সঙ্গে থাকা বিকল্পধারার শমসের মবিন চৌধুরীও এখানে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি মনোনয়ন প্রত্যাহার করছি না। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুসারে বিকল্পধারার হয়ে আমি কুলা প্রতীকে নির্বাচন করব। মহাজোটের ক্ষেত্রে সিলেট-৬ আসনের মতো প্রার্থী জটিলতায় উন্মুক্ত থাকছে সিলেট-৫ আসনও।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাফিজ মজুমদার বলেন, এই আসন উন্মুুক্ত থাকছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী থাকায় ভোটব্যাংকে ভাগ পড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কোনো সমস্যা হবে না।
তবে নিজেকে মহাজোটের প্রার্থী দাবি করে বর্তমান এমপি সেলিমউদ্দিন বলেন, আমি জাতীয় পার্টির হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও এখনো নিজেকে মহাজোটের প্রার্থী মনে করি। আশা করি জোটের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেষ মুহূর্তে আমাকেই একক প্রার্থী হিসেবে বেছে নেবেন।