গরুর খামারে পুলিশের অভিযান, ৪১টি গরু উদ্ধার: ডাকাত সর্দারসহ গ্রেপ্তার ৬
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : আগুলিয়া এলাকার একটি গরুর খামারে অভিযান চালিয়ে ডাকাতি ও চুরি করা ৪১টি গরু উদ্ধার এবং ডাকাত সর্দারসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)।
মঙ্গলবার (১ মার্চ) দুপুরে জিএমপি’র সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জাকির হাসান।
গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতরা হলেন- খামার মালিক তথা ডাকাত সর্দার টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানার পাইশানা এলাকার মৃত পানু ওরফে চাঁনু বাদ্যকরের ছেলে মরন দাস ওরফে সুমন ওরফে তাপস (৩৫), রংপুরের কাউনিয়া থানার নিজপাড়া এলাকার ফজলুল হকের ছেলে আসাদুজ্জামান বাবু (৩০), মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানার বাগুটিয়া চরকাটারিপাড়া এলাকার সুকচান মোল্লার ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪০), বগুড়ার ধনুট থানার বামননগর এলাকার মৃত রাজিব জামানের ছেলে আব্দুল মালেক (৪০), টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার বাগুটিয়া এলাকার মৃত প্রদীপ রাজবংশীর ছেলে দূর্জয় রাজবংশী জাইল্লা (২৮), ঢাকার আগুলিয়া থানার চাকোলগ্রাম এলাকার আব্দুল করিম সদ্দারের ছেলে আল-আমীন (২৯)। গ্রেপ্তারকৃতরা গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর, বাংলাবাজার ও ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় বসবাস করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে জাকির হাসান জানান, কুমিল্লার ছাদেক (৫৮) ও তার ছেলে রাকিব (২২) তাদের খামারের জন্য গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে দিনাজপুরের আমবাড়ী হাট থেকে সাতটি গাভী, দুইটি বকনা বাছুর ও পাঁচটি ষাড়সহ মোট ১৪ টি গরু কিনে ট্রাকে করে ফিরছিলেন। পথে রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়কে কাশিমপুর থানার মোজারমিল এলাকায় পৌঁছলে একটি অজ্ঞাতনামা মাইক্রোবাস এসে গরুবাহী ওই ট্রাকের গতিরোধ করে ট্রাক থামাতে বলেন। পরে ৭/৮ জন যুবক মাইক্রোবাস থেকে লাঠি নিয়ে বের হয়ে ট্রাকের নিয়ন্ত্রণ নেন এবং ছাদেক ও রাকিবকে চোখ-মুখ, হাত-পা বেঁধে মাইক্রোবাসে তুলে নেন। পরে সাভারের গেন্ডা এলাকায় গিয়ে গরুগুলো ডাকাতদের ট্রাকে তুলে নেন এবং বাবা ছেলেকে তাদের ভাড়া করা ট্রাকে ফেলে ডাকাতরা পালিয়ে যান। এ ব্যাপারে কাশিমপুর থানায় মামলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে জিরানী বাজার থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক জব্দ করা হয়। এ সময় ট্রাকের সহযোগী রাজ্জাক দৌড়ে পালিয়ে গেলেও সুমনকে পুলিশ আটক সক্ষম হয়। পরে সুমন জিজ্ঞাসাবাদে জানায় আশুলিয়ার দক্ষিণ নাল্লাপপাল্লা গ্রামে তার একটি গরুর খামার রয়েছে। তদন্তকারী দল ওই খামারে অভিযান চালিয়ে চারটি গাভী, দুটিটি বকনা বাছুর, ৩৫টি ষাঁড়সহ মোট ৪১টি পশু খামারে পায়। এসব পশু ক্রয়ের প্রয়োজনীর কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেন নাই। এক পর্যায়ে মামলার বাদীকে জানানো হলে তিনি তার ক্রয় করা চারটি গাভী, দুইটি বাছুর এবং পাঁচটি ষাঁড়সহ ১১টি গরু শনাক্ত করেন। পরে সুমনের বাসায় অভিযান চালিয়ে চুরির গরু বিক্রির নগদ ১ লাখ ৬১ হাজার ৭৫০টাকা জব্দ এবং তার দেয়া তথ্যে অপর ৫ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনাটি বেতার বার্তার মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী থানা সমূহে অবগত করা হলে জিএমপির গাছা থানার চারটি গরু চুরি যাওয়া মামলার বাদী বগুড়ার আসাদ ওই খামারে গিয়ে তার চুরি হওয়া গরু থেকে দুটি গরু শনাক্ত করেন।